আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আপনি যদি কোনও ভাবে বিশ্বের দীর্ঘতম গাছটির কাছে পৌঁছে যান, তা হলেই একটি অস্বস্তিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। সেটা হল আপনাকে জরিমানা গুনতে হবে। এ হেন গাছটির নাম ‘হাইপিরিয়ন’। জন কিটসের এই নামে রয়েছে এক বিখ্যাত কবিতা। মনে করা হচ্ছে, এটিই দুনিয়ার জীবন্ত দীর্ঘতম গাছ। ক্যালিফোর্নিয়ার রেডউড ন্যাশনাল পার্ক এক নির্দেশিকা জারি করেছে, যদি কেউ এই গাছটির কাছাকাছি পৌঁছে যান তবে তাঁর ছ’মাস পর্যন্ত কারাবাস এবং ৫০০০ ডলার জরিমানা হবে! গাছটি রেডউড ন্যাশনাল পার্কের যথেষ্ট গভীরে রয়েছে। এটির কাছে পৌঁছতে গেলে যথেষ্ট ঝোপঝাড়ময় পথ পেরোতে হয়। বেশ কঠিন যাত্রা। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ট্রাভেল রাইটার্স এবং ব্লগারদের কল্যাণে গাছটি প্রবল জনপ্রিয়। তাই বহু মানুষ এর কাছে পৌঁছতে চান। গাছটিকে একবার চোখের দেখা দেখতে চান, ছুঁতে চান।
কিন্তু আপাতত তা বন্ধ। কেননা, ক্যালিফোর্নিয়ার রেডউড ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ গাছটির সম্ভাব্য দর্শকদের উদ্দেশ্যে এই বার্তা রেখেছেন– ‘আপনি নিজেই ঠিক করুন, আপনি এই অসাধারণ বনভূমির রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হবেন, নাকি এর ধ্বংসের কারণ হবেন?’ কেন ক্যালিফোর্নিয়ার রেডউড ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ এরকম ঘোষণা করলেন?
আসলে গাছটির ভিত্তিমূলের মাটি ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে, আরও নানা ভাবে গাছটির প্রাকৃতিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই বিঘ্ন মানুষের উপস্থিতিতে আরও বেড়ে যেতে পারে। তবে শুধু যে মানুষের ভয়েই কম্পিত গাছটির অস্তিত্ব, তা নয়। দাবানলের আশঙ্কাও রয়েছে এর। বিশ্বের বিভিন্ন ন্যাশনাল পার্কে কোনও কোনও প্রাচীন গাছকে খুবই যত্নের সঙ্গে রক্ষা করা হয়ে থাকে, নেওয়া হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য। যেমন, টিনফয়েলের মতো এক ধরনের অ্যালুমিনাম-বেসড বার্ন রেজিস্টান্ট মেটেরিয়াল দিয়ে কোথাও কোথাও গাছকে ঘিরে রাখা হয়। হয়তো এই গাছটিকেও ঘিরে রাখা হবে।
এমনিতেও এই ধরনের গাছকে রক্ষা করার আরও নানা কারণ আছে। পৃথিবীর প্রাচীন সব গাছ, তাদের ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির নানা জায়গায় নানা রকম ভাবে পল্লবিত হওয়ার রকম। কিছু বিশেষ ধরনের মাটিতে, বিশেষ ধরনের পরিবেশে, বিশেষ ধরনের আবহাওয়ায় সাধারণত কিছু বিশেষ গাছেপালা জন্মায় ও বেড়ে ওঠে। সেই প্রকারভেদটা সার্বজনীন হয় না বলেই পুরনো গাছকে বা কোনও বিশেষ গাছকে যত্ন করে রক্ষা করতে হয়। কেননা, জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে এগুলির বিশেষ গুরুত্ব থাকে। থাকে গবেষণার বিভিন্ন উপযোগিতাও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।