বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুত গতির সুপারকম্পিউটার হলো ‘ইএল ক্যাপ্টেন’। এটি ডিজাইন ও তৈরি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউলেট প্যাকার্ড এন্টারপ্রাইজ (এইচপিই) কোম্পানি। ২০২৪ সালের নভেম্বরে চালু করা হয় এটি। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুত গতির সুপারকম্পিউটারের তকমাটি নিজের দখলে নিয়ে ফেলে এই সুপারকম্পিউটার। তবে এর সিস্টেম ও ইকুইপমেন্ট ইনস্টলেশনের কাজ শুরু হয় আরও আগে, ২০২৩ সালের মে মাসে।
মেশিন লার্নিং অ্যান্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তিনির্ভর নতুন প্রজন্মের এই সুপারকম্পিউটার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লিভারমোরে অবস্থিত লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে স্থাপন করা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ছিল ফ্রন্টিয়ার। এই ফ্রন্টায়ারকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে নতুন প্রজন্মের ‘ইএল ক্যাপ্টেন’। এতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে লিনাক্সভিত্তিক টস (টিওএসএস) অপারেটিং সিস্টেম।
এই সুপারকম্পিউটিং সিস্টেমের গতি ২.৭৪৬৩ এক্সাফ্লপ। কম্পিউটারের কাজ করার দক্ষতা নির্ণয়ের একক ফ্লপস। এর পূর্ণরূপ, ফ্লোটিং পয়েন্ট অপারেশনস পার সেকেন্ড। অর্থাৎ সেকেন্ডে কতটি দশমিক ভগ্নাংশ হিসাব করতে পারে, তা। ফ্রন্টিয়ারের গতি ছিল ১.৫ এক্সাফ্লপ। নতুন সুপারকম্পিউটার ইএল ক্যাপ্টেন এখন এই দানবীয় হিসাব-ক্ষমতা ব্যবহার করে নিখুঁতভাবে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২ কুইন্টিলিয়ন (১-এর পরে ১৮টি শূন্য) হিসাব করতে পারে।
এই সুপার কম্পিউটারের কোরের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৬টি। এতে ব্যবহৃত হয়েছে এএমডি অপ্টিমাইজড ফোর্থ জেনারেশনের ২৪সি ১.৮জিএইচজেড প্রসেসর। এটি ডিজাইন ও তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি। এই সুপার কম্পিউটার পরিচালনা করতে ৩০-৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়, যা একটি ছোট শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহের সমতুল্য।
এইচপি কোম্পানির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইএল ক্যাপ্টেন বিশ্বের অন্য যেকোনো সুপার কম্পিউটারের চেয়ে প্রায় ১৬ গুণ বেশি শক্তিশালী ও দ্রুত গতি সম্পন্ন। ৭৭০ কোটি মানুষ—অর্থাৎ পৃথিবীর সব মানুষের একত্রে যে হিসেব করতে ৮ বছর সময় লাগবে, ইএল ক্যাপ্টেন তা করতে পারবে মাত্র ১ সেকেন্ডে। বর্তমানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জাতীয় নিরাপত্তা মিশনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে জাপান ইতিমধ্যে আরও বড় সুপারকম্পিউটার তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। ইএল ক্যাপ্টেনের গতি যেখানে এক্সাফ্লপসের (১০১৮) ঘরে, সেখানে জাপানের তৈরি জেটা-ক্লাসের গতি হিসাব করতে হবে জেটাফ্লপসে (১০২১)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।