জুমবাংলা ডেস্ক: আমেরিকার বিখ্যাত মডেল কেলসি টার্নার। তিনি ৭১ বছর বয়সি চিকিৎসকের খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে জেল খাটছেন। সরাসরি খুন না করলেও খুনের নেপথ্যে ছিলেন তিনিই। ২০১৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার চিকিৎসক তথা মনোবিদ থমাস বুরচার্ডের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয় একটি গাড়ির ভেতর রাখা ট্রাঙ্ক থেকে। রহস্যময় এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে কেলসি-সহ মোট তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২৯ বছরের কেলসির বিরুদ্ধে অভিযোগ, চিকিৎসক খুনে সহায়তা করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার অঙ্গুলিহেলনেই এই খুন করা হয়েছে। চিকিৎসককে খুনে মূল অভিযুক্ত কেলসির প্রেমিক জন কেনিসন। কেলসির সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ধরা পড়েন তাদের আরো এক বন্ধু। নাম ডায়ানা নিকোল পেনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মনোবিদ বুরচার্ডের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক ছিল কেলসির। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তারা। লাস ভেগাসে যে বিলাসবহুল বাড়িটিতে কেলসি এবং তার প্রেমিক থাকতেন, সেই বাড়ির ভাড়া দিতেন বুরচার্ড। মৃত্যুর কিছু দিন আগে বাড়ি ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন বুরচার্ড। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল। এরপরেই চিকিৎসককে খুনের সিদ্ধান্ত নেন কেলসি।
বৃদ্ধ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিথ্যা কিছু অভিযোগ এনেছিলেন কেলসি। তিনি দাবি করেছিলেন, শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিলেন বুরচার্ড। তার মোবাইলেও সে সব ভিডিও রয়েছে বলে অভিযোগ করেন মডেল। তবে বুরচার্ডের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ জানায়, চিকিৎসকের মোবাইলে তেমন কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। তিনি শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিলেন বলে অন্য কোনো প্রমাণও মেলেনি।
কেলসির সঙ্গে বুরচার্ডের ঝামেলার মাঝেই আসরে নামেন মডেলের প্রেমিক কেনিসন। অভিযোগ, তিনি চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর করেন। আঘাতে মৃত্যু হয় বুরচার্ডের। বুরচার্ডের দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা জুডি ইয়ার্প তার খোঁজ না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশকে তিনি এ-ও জানান, খোঁজ মিলছে না আরো তিন জনের। সন্দেহের আঙুল তাদের দিকেই তোলেন জুডি। বুরচার্ডের মৃত্যুর পরে উধাও হন কেলসি, কেনিসন এবং তাদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকা ডায়ানা। তিন জনেই পালিয়ে গিয়েছিলেন শহর ছেড়ে।
যে বাড়িতে বুরচার্ডকে খুন করা হয়েছিল, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে অনেক কিছু উদ্ধার করে পুলিশ। পাওয়া যায় ঘর পরিষ্কার করার নানা সরঞ্জাম, রক্তের দাগ এবং কেনিসনের নাম লেখা বেশ কিছু জিনিসপত্র। ঘরের দরজা ভাঙা ছিল। যে গাড়িতে বুরচার্ডের দেহ পাওয়া গিয়েছিল, তাতে কেলসি এবং কেনিসনের আঙুলের ছাপও মিলেছে বলে জানায় পুলিশ। ফলে মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে বেশি সময় লাগেনি। বুরচার্ডের প্রেমিকা জুডি চুরির অভিযোগও আনেন মডেল কেলসির বিরুদ্ধে। তিনি আদালতে দাবি করেন, চিকিৎসক তার বাড়ির ভাড়া দিতে না চাইলে প্রায় তিন লাখ ডলার চুরি করে নেন কেলসি।
বুরচার্ডের হত্যায় তার ভূমিকার জন্য কেলসিকে ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০ থেকে ২৫ বছর জেল খাটতে হবে তাকে। পাশাপাশি, খুন এবং খুনের চক্রান্তের অভিযোগে গত বছর কেলসির প্রেমিক কেনিসনকে ১৮ থেকে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সাজা পেয়েছেন বন্ধু ডায়ানাও। ডায়ানার বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ নেই। তিনি খুনের পর কেলসি এবং কেনিসনের সঙ্গে মিলে রক্ত পরিষ্কার করে প্রমাণ লোপাটে শামিল হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। দোষীদের সঙ্গে তিনিও শহর ছেড়ে পালিয়ে যান।
কেলসি এবং কেনিসনের কঠোর সাজা দাবি করেছিলেন বুরচার্ডের সঙ্গিনী জুডি। তাদের কারাবাসের নির্দেশের পর কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন তিনি। আদালতের বাইরে বেরিয়ে জুডি বলেন, আমি কখনো ভাবতে পারিনি কেলসির মধ্যে এমন ভয়ঙ্কর এক শয়তান বাস করে। এই ঘটনা না ঘটলে কখনো তা বিশ্বাসও করতাম না। জুডি জানিয়েছেন, তিনি এখনও আতঙ্কিত। কখনো বুরচার্ডের খুনিরা জেল থেকে বেরোলে তার উপর হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। সারা ক্ষণ এই ভয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে জুডিকে।
সূত্র: আনন্দবাজার
স্ত্রীকে সর্বক্ষণ কাছে রাখতে সিলিকনের প্রতিমূর্তি তৈরী করেন প্রৌঢ়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।