জুমবাংলা ডেস্ক : ফারুক হোসেন নামে এক চাষি গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেগুন গাছে টমেটো ফলিয়েছেন। তার আবাদ করা জমিতে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। নতুন এ পদ্ধতির চাষে আশা দেখছে মেহেরপুরে সদর উপজেলার হিজুলী গ্রামের অন্যান্য চাষিরাও।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) হিজুলী গ্রামে কৃষক ফারুক হোসেনের জমিতে গিয়ে বেগুন গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ টমেটোর দেখা মেলে। জানা গেছে, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করছেন ফারুক।
মোট পাঁচ কাঠা জমিতে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বারি হাইব্রিড ৮ জাতের টমেটো চাষ করেছেন কৃষক ফারুক। তার গাছগুলোর নিচের দিকে বেগুন, উপরের দিকে ফলেছে টমেটো। বেশিরভাগ বেগুনই বর্তমানে কাঁচা। ফারুক জানিয়েছেন, শিগগিরই তার ফল পাকতে শুরু করবে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় ১৫ কাঠা জমিতে তিন চাষি গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চাষ করছেন। এতে লাভবান হচ্ছেন তারা। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বারি-৮ টমেটোর চাষ করছেন প্রত্যেকেই।
ফারুক জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ বছরই প্রথম তিনি ৫ কাঠা জমিতে বেগুন ও টমেটোর একত্রে চাষ শুরু করেন। বেগুনের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন টমেটোর ফলনে তিনি বেশি মনোযোগী। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা চাষের পেছনে খরচ হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আরও ২৫ হাজার টাকার টমেটো বিক্রির উপযোগী হচ্ছে বলেও জানান এ চাষি।
তিনি বলেন, বীজতলা তৈরির পর বেগুনের গাছ বড় হলে তিনি গ্রাফটিংয়ের কাজ শুরু করেন। এরপর শুরু হয় টমেটোর আবাদ। বেগুন গাছ অনেকদিন ফল দেয়। ফলে শীত কালের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালেও টমেটো পাওয়া যাবে।
গ্রাফটিং পদ্ধতির চাষে বেশি কীটনাশক দরকার হয় না। ফলন যেমন ভালো, বিক্রিও ভালো। তাই আগামীকে ১ বিঘা জমিতে বেগুন ও টমেটো চাষের পরিকল্পনা করছেন ফারুক।
ফারুকের চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের সমসের আলী। তিনি বিভিন্ন সবজির চাষ করেন। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে তিনি ২ বিঘা জমিতে বেগুন ও টমেটোর চাষ করবেন বলে জানান। পরীক্ষামূলক ১০ কাঠা জমিতে এ চাষের পরিকল্পনা করছেন গাংনী উপজেলার শুক্কুর আলীও।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেগুন চারার গোড়ার দিকের অংশের সঙ্গে টমেটোর চারার ওপরের দিকের অংশ জোড়া দিয়ে গ্রাফটিং করা হয়। এভাবে লাগানো টমেটোর চারা বড় হয়ে ঢলে পড়ে না, রোগ বালাইও তেমন হয় না। সাধারণ একটি গাছে ৫ থেকে ১০ কেজি টমেটো পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষ করা প্রতিটি গাছে মেলে ১৫ থেকে ২০ কেজি টমেটো। এ ধরনের টমেটো গাছ পানি সহনীয়। ফলে ভারি বৃষ্টিতেও নষ্ট হয় না।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সামসুল আলম বলেন, আমরা গ্রাফটিং পদ্ধতির চাষে সার্বিক সহযোগীতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া কৃষি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ফলে সব ধরণের ফসলে গ্রাফটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে বলেও তিনি আশা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।