রাজধানীর সূত্রাপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুন হত্যার ঘটনায় একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে জানা গেছে, ডাব খাওয়ানোর কথা বলে হাসপাতালের গেটে মামুনকে ফাঁদে ফেলে ডেকে আনে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল। গত ছয় মাস ধরে জেল থেকে বের হওয়ার পর মামুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেছিল সে।

তদন্ত সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল কেনা হয় পাঁচ লাখ টাকায়। এর নেপথ্যে ছিল পুরোনো বিরোধ—মামুনের সঙ্গে তার প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সহযোগী সানজিদুল ইসলাম ইমন গ্রুপের দ্বন্দ্ব।
একসময় মামুন, ইমন ও কামাল—তিনজনই মিলে রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতো। তবে ২০২৩ সালে জামিনে বেরিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করতে শুরু করেন মামুন। এতে ইমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং কারাগার থেকেই কয়েকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করে। পরে মামুন হাত মেলায় বিদেশে থাকা আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সঙ্গে। আফতাবনগর, শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও এলাকায় নতুন চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে তারা। এতে ইমন গ্রুপের স্বার্থে বড় ধাক্কা লাগে।
সূত্র বলছে, বিদেশে বসেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে ইমন। সম্প্রতি তার চাঁদাবাজির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মামুন-জিসান জুটি। এর জেরেই হত্যা।
আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর থেকেই মামুনের পিছু নেয় কামাল। ডাব খাওয়ার কথা বলে তাকে ডেকে আনে সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। সেখানেই ওত পেতে ছিল শুটার ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহমেদ ওরফে পিয়াস। ডাবের দোকানে অর্ডার দেওয়ার পর প্রথম গুলি ছোড়া হলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পালাতে গেলে পায়ে বেধে পড়ে যায় মামুন। তখন তাকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি পাঁচটি গুলি করে ফারুক ও রবিন। হত্যার সময় সেখানে মোট নয়জন উপস্থিত ছিল।
হত্যার পাঁচ দিন পর শনিবার সূত্রাপুর থানায় মামলা করেছেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার রীপা। মামলায় অজ্ঞাত ১০–১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ডিবি ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে অস্ত্র মামলায়। হত্যা মামলার তদন্তে কার কি ভূমিকা ছিল তা তদন্ত কর্মকর্তা নির্ণয় করবেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ইমনের নির্দেশেই হত্যার পরিকল্পনা করে রনি—যার প্রকৃত নাম রাজ্জাক। বাড়ি মাদারীপুরে। অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং ভাই সুমন মিরপুর যুবলীগের নেতা হওয়ায় এলাকায় দাপট দেখাত। মামুনকে হত্যার জন্য দুই লাখ টাকায় ভাড়া করা হয় ফারুক ও রবিনকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



