ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়, সেই বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

যশোরের অভয়নগর উপজেলার শিল্পশহর নওয়াপাড়ায় ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের মামলায় আলোচিত বিএনপির পদস্থগিত নেতা আসাদুজ্জামান জনিকে খুলনা থেকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে খুলনা শহরের রোজ গার্ডেন হোটেল থেকে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে আটক করা হয়। আটকের পর জনিকে নওয়াপাড়াতে তার ইকোপার্কসহ বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আলীম বলেন, অভিযান শেষে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে জনি আটকের খবরে বৃহস্পতিবার দুপুরে অভয়নগর থানার আশেপাশে তার স্বজন ও সমর্থকদের ভিড় করতে দেখা যায়। তবে তারা কেউ এ নিয়ে সাংবাদিকের সামনে কথা বলতে রাজি হননি।

জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতির পটপরিবর্তনের পর দলীয় বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি তার পদ স্থগিত করে।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর অভয়নগরে নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে অপহরণের পর জনির কণা ইকো পার্কে বালুতে পুঁতে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা ও এর আগে ২ সেপ্টেম্বর অস্ত্রের মুখে আটকে আরও দুই কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন। ঘটনার ১১ মাস পর চলতি বছরের ২ আগস্ট আসাদুজ্জামান জনিসহ ছয়জনের নামে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। একই অভিযোগ স্থানীয় সেনা-ক্যাম্পেও দেন ভুক্তভোগী নারী। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ডিশ ব্যবসায়ী মিঠু ও জনির বাবা কামরুজ্জামানকে আগেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সবশেষ বৃহস্পতিবার সকালে জনিকে আটক করে। পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত তিন আসামি পৌর বিএনপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট হোসেন, নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্মভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য মফিজুর রহমান দপ্তরী ও গরু হাটখোলার সৈকত হোসেন হিরা।

অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম জানান, বাকিদের আটকে অভিযান চালছে। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পলাতক থাকলেও তাদের স্বজনেরা যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চাঁদাবাজির ঘটনা অস্বীকার করেন।

চাঁদাবাজির ঘটনায় কোনো উপদেষ্টা জড়িত কিনা, স্পষ্ট করা দরকার : সালাহউদ্দিন

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন জনি। জমি দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরণের অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তার নাম। তার বাহিনীর ভয়ে নওয়াপাড়ার অন্তত দুজন ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।