জুমবাংলা ডেস্ক : নীলফামারীর সৈয়দপুরে সিটি ব্যাংকের এক গ্রাহকের হিসাব থেকে প্রায় সোয়া ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। কয়েকজন কর্মকর্তা গোপনে এই টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে এক কর্মকর্তা পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রাহক ও তার স্বজনেরা আটক করেছেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক মোছা. শরিফা (৩৫) গতকাল বৃহস্পতিবার টাকা তুলতে গিয়ে আত্মসাতের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি শহরের হাতিখানা বানিয়াপাড়া এলাকার দোলনের স্ত্রী ও একই এলাকার প্রয়াত চাল ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলীর মেয়ে।
এ ঘটনায় শরিফা ও তাঁর স্বজনেরা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে ধরে ওই দিন রাত ৯টা পর্যন্ত শাখা ব্যবস্থাপকের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। নানা টালবাহানা শেষে ব্যবস্থাপক টাকা ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শরিফা সিটি ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখায় ৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর) অর্থাৎ স্থায়ী আমানত হিসাব খোলেন। বাবার সম্পত্তি ও নিজের গয়না বিক্রি করে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর ওই এফডিআর করেন তিনি। এরপর চলতি বছরে নেওয়া ব্যাংকের বিবরণ অনুযায়ী, ওই হিসাব নম্বরের বিপরীতে মোট ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ২৩০ টাকা ৫৭ পয়সা জমা ছিল।
শরিফা পারিবারিক প্রয়োজনে এফডিআর ভেঙে টাকা তুলতে গেলে তাঁকে ব্যাংক থেকে জানানো হয়, ওই হিসাব নম্বরের অনুকূলে কোনো টাকা নেই। তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ কথা শুনে তিনি হতবাক হন। পরে ব্যাংকের যে কর্মকর্তার মাধ্যমে এফডিআর করেছিলেন, তাঁর কাছে বিষয়টি জানতে চান।
ব্যাংকের ঋণ শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইসতেকুর ইসলাম সেতু প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করতে থাকে। বাধ্য হয়ে বিষয়টি আত্মীয়স্বজন ও সাংবাদিকদের জানান শরিফা। এতে সেতু গা ঢাকা দেন। এরপর গোপনে শহরের কাজীপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে জিনিসপত্র নিয়ে সটকে পড়ার সময় সেতুকে ধরে ব্যাংকে আনা হয়।
এ বিষয়ে সেতুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। এতে ব্যাংকের কোনো ত্রুটি নেই। আমিই টাকাটা কৌশলে সরিয়েছি। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কয়েকজন মিলে এ অপকর্ম করলেও দায় আমার ঘাড়েই চেপেছে। যিনি মূল খলনায়ক, তিনি পার পেয়ে গেলেন।’
যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখার ব্যবস্থাপক সুলতান মাহবুব খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি মাত্র ১০ মাস হলো এই শাখায় এসেছি। আর এফডিআর করা হয়েছে ২০২২ সালে। সেই সময়কার ম্যানেজার রেজোয়ান করিম ও সেতুই ভালো বলতে পারবে। তবে টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে গ্রাহককে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।