জুমবাংলা ডেস্ক : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ব্ল্যাকমেইল করে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে নেয়া হয়েছিল। আজ (শনিবার, ১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
২০১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল ছিলো পুরোটাই পাতানো। সরকার যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই ফলাফল শিট তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। এমন তথ্য জানিয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ভীতিকর অবস্থা তৈরি করে তার দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো হয়েছে। নির্বাচন থেকে সরে আসতে চাইলে নানা ধরনের চাপপ্রয়োগ ও ব্ল্যাকমেইল করা হয় বলেও স্বীকার করেন তিনি। এখন টিভির সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন জি এম কাদের।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির পথচলা শুরু হয় ২০০৮ সালের এর ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে। সেবার বিএনপি জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটকে হারিয়ে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির মহাজোট সরকার। এরপর পর থেকেই কখনো বিরোধী দল, কখনো সরকারের মন্ত্রিসভায়। আবার কখনো উভয় ভূমিকায় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্ভার সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দৃশ্যত দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় দলটি। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও রওশান এরশাদের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ নির্বাচনে গিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। একইসঙ্গে সরকারের মন্ত্রীসভায় স্থান দলের ৩ নেতা।
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাপার বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানান ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সবগুলো দলই অংশ নিয়েছে।
ফলে এখানে জাতীয় পার্টিকে আলাদা দোষারপের সুযোগ নেই। কিন্তু, সবশেষ অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে জোর করে নেয়া হয়েছে। এমনকি এ সবশেষ দুটি নির্বাচনে ফলাফল ইচ্ছেমত সাজানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় পার্টি কেন এক তরফা এসব নির্বাচনকে বৈধতা দেয়ার ভূমিকা পালন করেছে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাকে ব্লাকমেইল করে অংশগ্রহণ করা হয়েছে। দলভাঙ্গাসহ নানাদিক থেকে চাপের মুখে ছিলেন তিনি।
চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘এইটা একটা দল। দলের বাহিরে গিয়েতো আমি একা কিছু করতে পারি না। তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম এই নির্বাচনটা এভাবে না হোক আমরা না যায় এই নির্বাচনে। এক পর্যায়ে এমন হলো আওয়ামী লীগ আমার দলে বিভাজন সৃষ্টি করে দিলো। দুই ভাগ করে রেখেছিল। আমাকে ৪ থেকে ৫ মাস তখন কোনো কাজই করতে দেইনি। বিভিন্ন সময় সরকার লোভ- লালসা দিয়ে রাখতো’
তিনি বলেন, ‘প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিনও তিনি নির্বাচন থেকে সরে যেতে চেয়েছিলেন।’ কিন্তু তখনো বিভিষিকা ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এমনকি নির্বাচন দিনও দলকে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিতে চাইলে তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী দ্বারা পরাজয় বরণ করানোসহ নানা চাপপ্রয়োগ করা হয় তার উপর।
আলাপের একপর্যায়ে জাপা চেয়ারম্যান জানান, ২০১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল শতভাগ সাজানো ছিল। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনে ফলাফল তিন ভাবে ঠিক করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের আজ্ঞাবহ থেকে নির্বাচন কমিশনই পাতানো ফলাফল তৈরির এ কাজ করেছেন।’
এক্ষেত্রে জয়ী হওয়া প্রার্থীকেও ইসি পরাজিত ঘোষণা করেছেন বলে দাবি তার।
এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘পদত্যাগ করতে হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে। এমনকি বিচারের মুখোমুখি করতে হবে কমিশনকে।’
কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।