জুমবাংলা ডেস্ক : সাতক্ষীরায় আলোচিত স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় সিআইডির কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে নিহত শাহিনুরের ভাই রায়হানুল ইসলাম।
তার দেয়া তথ্যমতে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ বাড়ির পাশের পুকুর থেকে খুনের সময় ব্যবহৃত তোয়ালে ও একটি ধারালো চাপাতি উদ্ধার করেছে।
বুধবার বিকাল ৪টার দিকে সাতক্ষীরা সিআইডি অফিসে এক প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক।
তিনি জানান, রিমান্ডে নেয়া রায়হানুল ইসলাম ১৬১ ধারায় সিআইডি পুলিশের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে বেকার ছিল। কোন কাজকর্ম করত না। সেজন্য তার ভাবি সাবিনা খাতুন প্রতিনিয়ত খাওয়ার জন্য খোটা দিত। সেই ক্ষোভের জায়গা থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে ভাবিকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় রায়হানুল।
ঘটনার দিন রাতে কোমল পানির সাথে ঘুমের অসুধ মিশিয়ে ভাবি, ভাতিজা ও ভাতিজিকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে। এরপর রায়হানুল রাত ১টা পর্যন্ত টিভিতে খেলা দেখছিল। তারপর বড় ভাই শাহিনুর এসে কারেন্ট বিল উঠছে বলে টেলিভিশন বন্ধ করার জন্য বকাবকি করে। এরপর ভাইকেও মেরে ফেলবে বলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় ভাইকেও ঘুমের অসুধ মেশানো পানিয় খাওয়ায়।
রাত ৩টার দিকে প্রথমে ভাই শাহিনুরের দুই পা বেঁধে ধারালো চাপাতি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। পরে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তার ভাভিকেও গলাকেটে হত্যা করে। এ সময় ভাভির গোঙানির শব্দে ভাতিজা সিয়াম হোসেন মাহী ও ভাতিজি তাসনিম সুলতানা ঘুম থেকে উঠে যায়। তারা খুনের ঘটনা দেখে ফেললে তাদেরকেও হত্যা করে চাচা রায়হানুল। পরে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত চাপাতি বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে রক্তমাখা তোয়ালে পানিতে ধুয়ে গোসল করে ফেলে।
প্রেস ব্রিফিং এর সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সিআইডির এসপি আনিছুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।
অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক আরও জানান, খুনি রায়হানুল ইসলামের স্বীকারোক্তিতে আলোচিত এই ফোর মার্ডারের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিং-এ অতিরিক্ত ডিআইজি আরও জানান, হত্যার ঘটনায় ১৭ অক্টোবর হত্যার গ্রেপ্তার কলারোয়া উপজেলার খলসি গ্রামের প্রতিবেশী আব্দুস সামাদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (২৮), আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল মালেক (৩৫) ও একই গ্রামের ঘের কর্মচারি আসাদুল ইসলামকে (২৭) আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তাদেরকেও জিঙ্গাসাবাদ করা হবে। হত্যার ঘটনায় তাদের কেউ সম্পৃক্ত কিনা সেটি পরিস্কার হতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর ভোররাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে মৎস্য হ্যাচারির মালিক শাহিনুর, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে গলাকেটে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ সময় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় তাদের চার মাসের শিশু কন্যা মারিয়া সুলতানা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।