আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে আজ শনিবার (৪ এপ্রিল) রাত ৮টা পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,০৮২ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৬ জনের।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল’র এক প্রতিবেদনে আজ শনিবার (৪ এপ্রিল) বলা হয়, ভারতে দিন দিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যও। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০১ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। একদিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক। কিন্তু এই পরিসংখ্যানের একটা হিসেব চমকে দেওয়ার মতো। যেখানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার সিংহভাগই বয়স্ক, সেখানে ভারতে সবথেকে বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যুব সম্প্রদায়ের মানুষ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ভারতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২০ বয়সের নীচে জনসংখ্যার পরিমাণ ৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত জনসংখ্যার পরিমাণ ৪১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত জনসংখ্যার পরিমাণ ৩৩ শতাংশ ও ৬০ বছরের উপর জনসংখ্যার পরিমাণ ১৭ শতাংশ।
এই পরিসংখ্যান বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা আলাদা। ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই দেখা গিয়েছে ৫০ বছরের বেশি জনসংখ্যার মানুষরাই বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও তাঁদেরই বেশি হচ্ছে। এর কোনও নির্দিষ্ট কারণ না দেখালেও চিকিৎসকরা বলছেন, বয়স যত বাড়ে তত মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। সেইসঙ্গে বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগ দেখা যায়। আর তাই কোভিড ১৯-এর মতো ভাইরাস এইসব মানুষকে সহজেই কাবু করে নিতে পারে। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে তাই এই ভাইরাসের প্রকোপ কম হয়।
ভারতের ক্ষেত্রেও প্রথমের দিকে যেসব করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছিল, তাঁদের বেশিরভাগেরই বয়স বেশি। তাহলে হঠাৎ এই পরিসংখ্যানে বদল কী ভাবে এল?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ধারণা, এই বদলের অন্যতম কারণ হল নিজামুদ্দিনের ওই জমায়েত। ইতিমধ্যেই নিজামুদ্দিনের মসজিদে তবলিঘি জামাতের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া প্রায় হাজার জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গয়েছে। আর তারজন্যই গত কয়েক দিনে সংখ্যাটা লাফিয়ে বেড়েছে। এখনও অনেকের মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এই জমায়েতে অংশ নেওয়া জনসংখ্যার বেশিরভাগই ২১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তাই এই পরিসঙ্খ্যান বদলেছে বলেই ধারণা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের।
করোনার এই সঙ্কটের মধ্যে নিজামউদ্দিনের জমায়েত আরও আশঙ্কা বাড়িয়েছে সরকারের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নিজামুদ্দিনের জমায়েতে উপস্থিত এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা প্রায় ন’হাজার জনকে চিহ্নিত করে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৩০৬ জন বিদেশি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, তল্লাশি চালিয়ে অন্তত ৪০০ জন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে, যাঁরা তবলিগি জামাতের সদস্য। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা আগরওয়ালের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।