আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার দেশটিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তৈরির পর তা চালুর বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিলো। গত ১১ মার্চ চালু করা এই আইনের অধীনে সেইদিন থেকেই নাগরিকত্ব পেতে অনলাইনে আবেদনের সুযোগ থাকলেও দেড় মাসে একজনও সরকারের কাছে আবেদন করেননি। ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর এই আইনটি চালু করা হলেও তা বলবৎ হতে চলতি বছর লেগে যায়।
সিএএ আইনে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও পারসি ভারতে আসবেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এই আইনের আওতায় ওই তিন রাষ্ট্রের মুসলমান নাগরিকেরা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য নন।
আইনটি তৈরির পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছিল বিক্ষোভের। বিজেপি যদিও বলেছিল, এই আইনে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কাড়ার নয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বিভাগের নাগরিকত্ব শাখার যুগ্ম সচিব রামদয়াল মীনা তথ্য জানার অধিকার আইনে করা এক প্রশ্নের উত্তরে এই কথা জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের সমাজ ও আইন গবেষক এবং তথ্য জানার অধিকারকর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামীর দাখিল করা প্রশ্নের উত্তরে ২৩ এপ্রিল তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ওই আইনে একজনও নাগরিকত্ব পেতে সরকারের কাছে আবেদন করেননি।
আইনি ভাষায় উত্তর দিয়ে ওই যুগ্ম সচিব চিঠিতে লেখেন, ‘এই বিষয়ে তিনি নিজে থেকে কোনো তথ্য তৈরি বা সংকলন করতে পারেন না। ’ যার অর্থ, বিজ্ঞপ্তি জারির ৪৫ দিন কেটে গেলেও আবেদনের সংখ্যা শূন্য।
তথ্য জানার অধিকার আইনে বিশ্বনাথ গোস্বামী সরকারের কাছে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলেন। যেমন সারা দেশের সব রাজ্য থেকে কতজন আবেদন করেছেন।
রাজ্যওয়ারি হিসাব কী, আবেদনকারীদের ধর্মীয় পরিচয়ই–বা কী? পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া ও রাজবংশী সম্প্রদায় থেকে কতজন আবেদন জানিয়েছেন জানতে তিনি আবেদনকারীদের জাতভিত্তিক পরিচয়ও জানতে চেয়েছিলেন। এমনকি আবেদনকারীদের মধ্যে কোনো বিধায়ক বা সংসদ সদস্য আছেন কি না, আবেদনকারীরা কে কোন পেশার সঙ্গে জড়িত এসবও জানতে চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই আইনে নাগরিকত্ব পেতে গেলে প্রথমেই আবেদনকারীকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তিনি বিদেশি। ভারতের নাগরিক নন। তারপর আবেদনপত্র কোনো কারণে খারিজ হয়ে গেলে এত কাল ধরে পেয়ে আসা যাবতীয় নাগরিক অধিকার আর তিনি পাবেন কি না, সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, সিএএ নিয়ে একদল মিথ্যা এবং ভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে। সিএএ আইন কোনো সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং নিপীড়িত নির্যাতিতদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।