বর্ষাকালে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘর থেকে বের হতে হবে কর্মজীবী মানুষদের। রাজধানীর কর্মজীবীদের একটি অংশ হচ্ছে বাইকার। তাই বৃষ্টির দিনে না ভিজে গন্তব্যে পৌঁছতে একটা ভালো রেইনকোটের বিকল্প নেই। তবে মূল সমস্যা হলো ভালো রেইনকোট পাব কোথায়???
রেইনকোটের একমাত্র কাজ হলো বৃষ্টির পানি থেকে আমাদেরকে সুরক্ষা দেয়া। কিন্ত এই কাজে যদি রেইনকোট ব্যর্থ হয় তাহলে সেই রেইনকোট মূল্যহীন। তাছাড়া লিক হয়ে রেইনকোটের ভিতর পানি ঢুকে গেলে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
বাজারে যেসব রেইনকোট পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই শতভাগ পানিরোধী নয়। ওয়াটার লিকেজ এড়াতে আমরা অনেক নামীদামী রেইনকোট পরীক্ষা করে দেখেছি এবং হতাশ হয়েছি। টাকার অপচয় হয়েছে অনেক। রেইনকোটের উপরের অংশটি মোটামুটি পানিরোধী হলেও প্যান্ট দিয়ে পানি লিক হওয়ার প্রবণতা থাকে, যার ফলে পুরো রেইনকোটই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
তাই আজকে শেয়ার করব রেইনকোট কেনার কিছু সিক্রেট টিপস।
☑️ প্রথমেই সর্বনিম্ন ৫০০-৭০০ এবং সর্বোচ্চ ৩৫০০-৪৫০০ এই দুই রেঞ্জের রেইনকোট লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিন। কারন ৫০০ টাকার রেইনকোট অত্যন্ত নিম্মমানের এবং ৩৫০০ টাকার উপরের রেইনকোট দিয়েও পানি লিক করার প্রচুর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তাই কার্যত দুই রেঞ্জের রেইনকোটের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমাদের দেশে প্রাপ্ত নামী ব্রান্ডের দামী রেইনকোটগুলোর প্রায় সবই রেপ্লিকা অথবা মাস্টার কপি, সুতরাং সাবধান।
☑️ রেইনকোটের জন্য বাজেট রাখবেন সর্বনিম্ন ১০০০-১২০০ এবং সর্বোচ্চ ২০০০-২২০০ টাকা। এই রেঞ্জের রেইনকোটগুলোর ম্যাটেরিয়াল তুলনামুলক ভাল পেয়েছি। রেইনকোট উল্টে দেখে নেবেন সেলাই দেওয়া জায়গাগুলোতে প্লাস্টিক দিয়ে সিল করা আছে কিনা।
☑️ রেইনকোটের জিপার দিয়েই পানি লিক করার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। তাই জিপারের ভেতরের দিকে ওয়াটার সিল এবং বাইরের অংশে অতিরিক্ত সুরক্ষা লেয়ার দেওয়া আছে কিনা চেক করবেন। বাজারে ইদানিং সেলাই ছাড়া প্লাস্টিক ওয়েল্ডিং করা কিছু রেইনকোট পাওয়া যায়, সেগুলো দেখতে পারেন।
☑️ প্যান্টের ক্ষেত্রে প্রতিটি সেলাইয়ের নিচে থাকা ওয়াটার সিল পরীক্ষা করে করবেন। এত বেশি চেক করলে দোকানদার ভুরু কুঁচকে বিরক্ত হতে পারে। কিন্ত এই চেকটা আপনার স্বার্থেই আপনাকে করে নিতে হবে। কেননা রেইনকোট লিক হলে রাস্তায় আপনাকেই ভিজতে হবে, তখন দোকানি এসে আপনার মাথায় ছাতা ধরবে না।
☑️ চেষ্টা করবেন আপনি যে এলাকায় থাকেন তার নিকটবর্তী দোকান থেকে রেইনকোট কেনার, যদি একেবারেই না পান তাহলে বংশাল অথবা মিরপুরের বড় কোনো দোকান থেকে রেইনকোট কেনার চেষ্টা করবেন। কারণ এতে করে ওয়ারেন্টি পেতে সুবিধা হবে। বড় দোকান কখনোই তার সুনাম নষ্ট হতে দিতে চায় না।
☑️ ওয়ারেন্টির বিস্তারিত খুব ভালো করে বুঝে নেবেন। কী কী শর্তে তারা রেইনকোট পাল্টে দেবে সেটা খুব মনোযোগ দিয়ে বুঝে নেবেন। প্রয়োজনে তারিখসহ লিখিত নেবেন ৷ রেইনকোটে পানি ঢুকে কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য রেইনকোট গায়ে দিয়ে বাইক ওয়াশের দোকানে গিয়ে সফট প্রেশারে ওয়াটার স্প্রে করে দেখতে পারেন।
☑️ যত দামিই হোক, সাধারণত একটা রেইনকোট মোটামুটি এক থেকে দুই বছর ঠিকঠাক সার্ভিস দিতে সক্ষম। এরপর কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই বেশি দামি রেইনকোট না কিনে এক থেকে দুই বছর পর পর নতুন রেইনকোট কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাছাড়া ১ থেকে ২ হাজার টাকা রেঞ্জের রেইনকোট নিলে আপনার পকেটের উপরেও চাপ কম পড়বে। একটা দামি রেইনকোটের পরিবর্তে মিডরেঞ্জের ২-৩ টা রেইনকোট কিনতে পারছেন যা দিয়ে ৪-৫ টা বর্ষাকাল অনায়াসে পার করতে পারবেন।
☑️ সস্তায় ভালো রেইনকোট কিনতে চাইলে মিরপুরের কচুক্ষেতে আর্মিস্টোরের আশে পাশে খোঁজ করতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।