নিজস্ব প্রতিবেদক: পানির মাঝখানে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে আঁকা-বাঁকা আঞ্চলিক পিচঢালা পাকা সড়ক। আর এই সড়কের দুই পাশ দিয়ে রয়েছে ছোট-বড় অনেক মাছের ঘের। প্রকৃতির এমন অপরুপ সৌন্দর্য্যে আচ্ছাদিত জলরাশির উপর গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান রেস্টুরেন্ট।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আরএমটিপি (মৎস্য) উপ-প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় এসডিএস (শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি) কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন খান বাবুলের মাছের ঘেরে এই ভাসমান রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়।
রেস্টুরেন্টটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ভাসমান খান রেস্তোরাঁ’। এটি শরীয়তপুর জেলার সবচেয়ে বড় ভাসমান রেস্টুরেন্ট। এটির অবস্থান শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সাজনপুর ইউনিয়নের জাজিহার সেতু সংলগ্ন পম নামক এলাকায়।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শরীয়পুর জেলার বৃহত্তম এই ভাসমান রেস্টুরেন্টের উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে বাহারি রঙের আলোয় সজ্জিত করা হয় রেস্টুরেন্ট ও এর আশপাশের এলাকা। গত বছরের নভেম্বরে এই রেস্টুরেন্টের কাজ শুরু হলেও প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন শত শত ভ্রমণপিসাসু ছুটে আসছেন ভাসমান এই রেস্টুরেন্টটি দেখতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবুল খাঁ এর মাছের ঘেরটি হওয়ার আগে জায়গাটির চারপাশে ভূতুড়ে পরিবেশ ছিলো। সহজে কেউ এদিক দিয়ে যাতায়াত করতো না। রাতে একাকী যাতায়াতে গা শিউরে উঠতো। ভয়ে গা ছমছম করতো। ঘেরটি হওয়ার পর সেই মানুষের সেই ভীতি কেটে যায়। এরপর ঘেরটিই পাশ ঘেষে শরীয়তপুর-চাদপুর সড়ক তৈরি হয়। তবে সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য ততটা উপযোগী ছিলো না। বছর খানেক আগে সড়কটি সংস্কার ও বর্ধিত করে এবং ঘের সংলগ্ন জাজিহার সেতু নামে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সংস্কারকৃত এই জনপথটিই বদলে দিয়েছে এখানকার চিত্র। বর্তমানে সড়কটি ঘিরে দুই ধারে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক দোকান, রেস্টুরেন্ট, কফি হাউজসহ বিভিন্ন রকমের বিনোদন কেন্দ্র। তারই মধ্যে বিশেষ আকর্ষন হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে ‘ভাসমান খান রেস্তোরাঁ’।
ভাসমান খান রেস্তোরাঁর পরিচালক খোকন খান জানান, আমার কাকা বাবুল খানের ২ হাজার ৩০০ শতাংশের মাছের ঘেরের ৫০ শতক জায়গায় পানির উপরে চার শতাধিক বড় আকারের প্লাস্টিক ড্রাম দিয়ে এই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরিতে প্লাস্টিকের ড্রাম, কাঠের পাটাতন ও লোহার এঙ্গেল ব্যবহার করা হয়েছে। পাটাতনের উপরে ১১টি টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেই ঘরের ভিতর চেয়ার টেবিল বসানো হয়েছে। এখানে একসঙ্গে শতাধিক অতিথি বসে খেতে পারবেন। কমিউনিটি সেন্টার, জন্মদিন উদযাপন, পার্টি সেন্টার, ইফতার পার্টি করার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া পরিচালকের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা রয়েছে। পুরো রেস্টুরেন্টে বাহারি রঙের বাতি লাগিয়ে নান্দনিক রূপ দেওয়া হয়েছে। কাজ এখনো চলছে। দর্শনার্থীদের জন্য নৌকা ভ্রমণ, ফিশিং এবং গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা করা হবে।
এসডিএস আরএমটিপি (মৎস্য) উপ-প্রকল্পের ভিসিএফ মোঃ আব্দুল জানান, এসডিএস কর্তৃক পিকেএসএফ এর আরএমটিপি নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে মাছের ঘেরে ভাসমান রেস্টুরেন্ট, নৌকা ভ্রমণ ও বিনোদনমূলক ফিশিং কর্মকান্ড ভিত্তিক ফিশারিজ বেইজড ইকোট্যুরিজম উন্নয়নের লক্ষ্যে উদ্যোক্তাকে সহায়তা প্রদান করা হয়। উক্ত সহায়তা এবং নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তার স্বপ্নের “ভাসমান খান রেস্তোরাঁ” নির্মাণ করেন। যা অত্র জেলায় ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।