রিয়াল মাদ্রিদের সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ম্যাচে ওই একটা কথা বারবার বলতে হয়। হুয়ান গোমেজ হুয়ানিতো যেমনটা বলেছিলেন, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক দীর্ঘ সময়। যুগে যুগে অনেকেই সেই কথার মাহাত্ম্য টের পেয়েছে। গতকাল আবার পেয়েছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ৩৪ মিনিটে ২ গোলে এগিয়ে থাকা দলটা অবাক বিস্ময়ে দেখেছে সফেদ শুভ্র গ্যালারির সামনে রিয়াল মাদ্রিদের আরেকটি দুর্দান্ত কামব্যাক।
ম্যাচের আগে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে অনুশীলন পর্যন্ত করেনি। কোচ নুরি শাহিনের শঙ্কা ছিল, অনুশীলনে গুপ্তচরবৃত্তি হতে পারে। জার্মানিতেই অনুশীলন পর্ব শেষ করেছিলেন। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অবশ্য শেষ হাসি হেসেছে রিয়ালই। সেটার নেপথ্যের কারিগর ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
ম্যাচের এক ঘন্টা পর্যন্ত ২ গোলে পিছিয়ে থাকার পর বাকি সময়ে ৫ গোল করে রিয়াল তুলে নিয়েছে ৫-২ ব্যবধানে জয়। ভিনিসিয়ুস পেয়েছেন লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। একটা করে গোল আন্টোনিও রুডিগার ও লুকাস ভাসকেজের। ম্যাচের ৬০ মিনিট থেকে শুরু করে পরের ৩৩ মিনিটে রিয়াল একের পর এক গোল পুরেছে বুরুশিয়ার জালে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বশেষ ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ আজ আরও একবার মুখোমুখি হয়েছিল বার্নাব্যুতে, এটা অবশ্য প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ। তাতে প্রতিশোধের চিন্তা নিয়ে ডর্টমুন্ড শুরুটা করেছিল ভাল। লম্বা লম্বা পাসে মাঠের এপাশ থেকে ওপাশে বল আদান-প্রদান করতে করতে রিয়ালের বক্সের সামনে উঠে আসে ডর্টমুন্ড। সেখান থেকে হঠাৎ বক্সের ভেতরে কিছুটা ডান দিকে বল ঠেলে দেন সেরিউ গিরাসি, তা ধরেই থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন ডনিয়েল মালেন।
এর পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডর্টমুন্ডের জেমি গিটেন্স। এবার তাকে অ্যাসিস্ট করেন মালেন। পাল্টা আক্রমণে উঠে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন মালেন। এরপর বিপরীত দিকে ক্রস বাড়ান তিনি। তা দেখে পেছন থেকে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে বল একপ্রকার ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন ২০ বছর বয়সী এই ইংলিশ উইঙ্গার।
এর ফলে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বকনিষ্ঠ ইংলিশ ফুটবলার বনে যান গিটেন্স। ২০ বছর ৭৫ দিন বয়সে তিনি এ রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল লিডস ইউনাইটেডের অ্যালান স্মিথের দখলে।
গোল খেয়ে পরের মিনিটেই ডর্টমুন্ডের রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় রিয়াল, কিন্তু দলটির দারণ ওই প্রচেষ্টা মুহূর্তের ব্যবধানে দুবার ক্রসবারে লেগে ফিরে আসার পর তৃতীয়বার দারুণ অসাধারণ একটি সেইভে দলের ব্যবধান কমাতে দেননি ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল।
কিন্তু বিরতির পর থেকে পিছিয়ে পড়া রিয়াল একের পর এক আক্রমনে অস্থির করে তোলে ডর্টমুন্ডের রক্ষনকে। প্রথম ফলটা পায় কিলিয়ান এমবাপ্পে-রুডিগারের যুগলবন্দীতে। এমবাপ্পের ক্রসে হেড করে ব্যবধান কমান রুডিগার (২-১)। এর মিনিট দুয়েক পরেই ভিনি জুনিয়র করেন সমতা ফেরানো গোলটা। শুরুতে রেফারি অফসাইড দেখিয়ে সেটা বাতিল করে দিলেও পরে ভিএআরে আসে গোলের সিদ্ধান্ত (২-২)।
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের ৭ মিনিট বাকি থাকতে লুকাস ভাসকেজের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল (৩-২)। ৮৬ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটা করেন ভিনিসিয়ুস। একাই বল টেনেছেন। শেষে বক্সের বাইরে থেকে তাঁর অসাধারণ শট (৪-২)। যোগ হওয়া সময়ের তৃতীয় মিনিটে পেয়ে যান হ্যাটট্রিকও (৫-২)। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি ভিনির তৃতীয় হ্যাটট্রিক, তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।