জুমবাংলা ডেস্ক : সরকার চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণরূপে অটোমেশনের আওতায় আনতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্প প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এর পাশাপাশি চালু হচ্ছে একটি নতুন ব্যবস্থা—‘সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ’।
Table of Contents
ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের অগ্রগতি
১৯ মে অনুষ্ঠিত ১৬তম প্রকল্প সভায় জানানো হয়, ১,১৯৭ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ এবং ১,২১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ডিজিটাল জরিপ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের কাজ ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. এমদাদুল হক চৌধুরী।
চারটি মূল ডিজিটাল সেবা
জুলাই থেকে সারা দেশে চালু হচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক চারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সেবা:
অনলাইন মিউটেশন
অনলাইন পরচা
অনলাইন ম্যাপ
অনলাইন ভূমি সার্টিফিকেট
১৭টি ডিজিটাল ভূমি সেবা
প্রকল্পের আওতায় একটি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি হচ্ছে, যার মাধ্যমে মিলবে ১৭টি সেবা:
ই-মিউটেশন
রিভিউ ও আপিল মামলা ব্যবস্থাপনা
অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর
রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা ব্যবস্থাপনা
মিউটেটেড খতিয়ান
ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড
মৌজা ম্যাপ ডেলিভারি সিস্টেম
মিস মামলা ব্যবস্থাপনা
খাসজমি ব্যবস্থাপনা
দেওয়ানি মামলা তথ্য ব্যবস্থাপনা
হাটবাজার, জলমহাল, বালুমহাল, চা-বাগান, ভিপি সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা
ভূমি অধিগ্রহণ ব্যবস্থাপনা
অভ্যন্তরীণ বাজেট ব্যবস্থাপনা
নাগরিক সেবা ও সুবিধা
এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৮ লক্ষ নাগরিক ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে দিয়েছেন। তিন কোটি জমির তথ্য ইতোমধ্যে ডিজিটাল হয়েছে। এতে ৭০ শতাংশ নাগরিক স্বচ্ছভাবে কর পরিশোধ করেছেন এবং ৫০ শতাংশ হয়রানি কমেছে।
মামলা ব্যবস্থাপনায় অটোমেশনের ভূমিকা
ভূমি রাজস্ব মামলা ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন সফল হলে:
অভ্যন্তরীণ সব মামলা এক প্ল্যাটফর্মে
অনলাইনে মামলা মনিটরিং ও সুপারভিশন
দেওয়ানি মামলা ব্যবস্থাপনা
পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি
মাঠপর্যায়ে কিয়স্ক ও প্রশিক্ষণ
জনবহুল এলাকায় ভূমি সেবা কিয়স্ক স্থাপন করা হবে, যেখানে ফি দিয়ে নাগরিকরা খতিয়ান, ম্যাপ প্রিন্ট ও কর পরিশোধ করতে পারবেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সফটওয়্যার ও যন্ত্রপাতির জন্য ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
দেশের ৫,২৪৭টি ভূমি অফিসে একযোগে অনলাইন সেবা চালুর প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট জনবলকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
দেশে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও মামলা হ্রাস এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমি ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন চালু হচ্ছে। ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্পের মাধ্যমে নাগরিকরা সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পাবেন, যা দেশের সার্বিক ভূমি ব্যবস্থাকে জনবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর করবে।
সূত্র: বাসস
FAQs: ভূমি
১. ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন কী?
ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন হচ্ছে এমন একটি ডিজিটাল ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে অনলাইন ভিত্তিক ভূমি সেবা প্রদান করা হবে। এতে ১৭টি সেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২. কবে থেকে ভূমি অটোমেশন সেবা চালু হবে?
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে সারাদেশে এই সেবা পুরোদমে চালু হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
৩. অনলাইন ভূমি সেবায় কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
নাগরিকরা অনলাইনে নামজারি, খতিয়ান, ভূমি কর পরিশোধ, মামলা পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন ভূমি সংক্রান্ত সেবা ঘরে বসেই পেতে পারবেন।
৪. ভূমি মালিকানা সনদ কী?
এটি এক ধরনের একক সার্টিফিকেট, যা একাধিক দলিলের পরিবর্তে মালিকানা প্রমাণে ব্যবহৃত হবে। এতে জমির মালিকানা যাচাই সহজ হবে।
৫. কীভাবে ভূমি সেবা কিয়স্ক ব্যবহার করা যাবে?
সুনির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপিত কিয়স্ক থেকে প্রয়োজনীয় ফি দিয়ে জমির খতিয়ান ও ম্যাপ প্রিন্ট করা যাবে এবং কর পরিশোধ করা যাবে।
৬. কতগুলো অফিসে অনলাইন ভূমি সেবা চালু হবে?
দেশের ৫,২৪৭টি অফিসে একযোগে অনলাইন ভূমি সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।