সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা ভূমিকম্পের আতঙ্কে রয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্শ্ববর্তী মধুপুর ফল্টে মাত্র ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটলে ঢাকা শহরের ৪০ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে, যা দুই লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি করবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ঢাকা শহরের অবকাঠামোর অধিকাংশই ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নয়। মধুপুর ফল্টের সম্ভাব্য ভূমিকম্পের প্রভাবের কারণে শহরের চার কোটি মানুষের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন হতে পারে।
এই আশঙ্কার মধ্যেই জাতিসংঘের নতুন ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টস-২০২৫ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহরে পরিণত হবে ঢাকা। বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা ৩ কোটি ৬৬ লাখ, যা বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরায়ণের দ্রুততা, গ্রাম থেকে রাজধানীতে মানুষের ব্যাপক আগমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবই ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতিতে শহরের নিরাপত্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ জরুরি।
জাতিসংঘ জানায়, ঢাকার বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে এটি বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করবে। ফলে আগামীতে ঢাকার জনসংখ্যা আরও কয়েক কোটি বাড়তে পারে।
নতুন তালিকায় ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ৪ কোটি ১৯ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে প্রথম স্থানে আছে। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে জাকার্তা উপকূলীয় জলবায়ু ঝুঁকি ও ডুবে যাওয়ার আশঙ্কার কারণে জনসংখ্যা হ্রাসের মুখে পড়তে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
এশিয়া এখনো মেগাসিটির প্রধান কেন্দ্র। বিশ্বে বিদ্যমান ৩৩ মেগাসিটির মধ্যে ১৯টি এশিয়ায় এবং শীর্ষ ১০-এর ৯টিই এই অঞ্চলে। ১৯৭৫ সালে এশিয়ায় মেগাসিটির সংখ্যা ছিল মাত্র ৮টি।
বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান নগরায়ণের এই গতির কারণে ঢাকার সামনে অবকাঠামো সংকট, পানি-জলাবদ্ধতা, ট্রাফিক ও বাসযোগ্যতার চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হবে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নতুন পদ্ধতিতে শহরের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ ১ কিমি গ্রিডে প্রতি বর্গকিলোমিটারে অন্তত ১,৫০০ জন থাকলেই সেটিকে শহর হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া, মোট জনসংখ্যা কমপক্ষে ৫০ হাজার হতে হবে।
জাকার্তা ও ঢাকা ছাড়া তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে টোকিও (৩ কোটি ৩৪ লাখ)। এ ছাড়া রয়েছে নয়াদিল্লি (৩ কোটি ২ লাখ), সাংহাই (২ কোটি ৯৬ লাখ), গুয়াংজু (২ কোটি ৭৬ লাখ), ম্যানিলা (২ কোটি ৪৭ লাখ), কলকাতা (২ কোটি ২৫ লাখ) ও সিউল (২ কোটি ২৫ লাখ)।
এশিয়ার বাইরে একমাত্র শহর মিশরের কায়রো, যার জনসংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখ। লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে বড় শহর ব্রাজিলের সাও পাওলো (১ কোটি ৮৯ লাখ)। আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে সবচেয়ে বড় শহর এখন লাগোস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



