ভ্রমণের জন্য কেমন ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল?

ব্রিস্টল

ব্রিস্টল শহরের নামটার সঙ্গে লেখকের পরিচয় অদ্ভুতভাবে। সিগারেটের নাম থেকে। যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল শহরের নাম আমার কাছে খুব পরিচিত একটা উদ্ভট কারণে। আইসিআইটি একটি স্বনামধন্য কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কনফারেন্স, যা প্রতিবছর ইউরোপ, আমেরিকা ও পূর্ব এশিয়ার আলাদা দেশে আয়োজিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় দেড় শ গবেষক উপস্থিত হন সেই কনফারেন্সে। এবারের আয়োজক ছিল ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের বিখ্যাত রোবোটিকস ল্যাব।

ব্রিস্টল

এখানেও অসাধারণ সব স্থাপত্যশৈলী আর সেই সঙ্গে মৃদুস্বরে চলছে অর্কেস্ট্রার সুর। বিশেষ করে ব্রিস্টল ক্যাথিড্রালের মতো বিশাল চার্চের ভেতরের সারি সারি বেঞ্চের কোনো একটাতে চোখ বন্ধ করে বসে থাকলে মনের মধ্যে কেমন যেন বুদ্‌বুদ উদ্‌গিরণ হয়। বারবার মনে পড়ে পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশের সেই বিখ্যাত বাংলা বন্দিশ ‘কূল ছেড়ে এসে মাঝ দরিয়ায়, পেছনের পানে চাই…’। পাওয়া যায় জীবনের ভিন্ন মানে। ঠিক যেমন মনটা আকুল করেছিল অস্ট্রো–হাঙ্গেরিয়ান শহর ক্লোজ নেপোকার সেই বিখ্যাত সেইন্ট মিকাইল (মাইকেল) চার্চ।

ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হলো তারা তাদের প্রাচীন স্থাপত্যকর্ম আগলে রাখে বুক দিয়ে। এই দেশেও অন্তত আরও পাঁচ মতবাদের চার্চ আছে; যেমন এংলিক্যানিজম, ক্যাথলিজম, চার্চ ইন ওয়েলস, মেথডিস্ট চার্চ অব গ্রেট ব্রিটেন, চার্চ অব আয়ারল্যান্ড ইত্যাদি। কিন্তু সব মতবাদই প্রাচীন স্থাপত্য রক্ষার মন্ত্রে দীক্ষিত।
ব্রিস্টলের সেই কালো অধ্যায় হলো এই শহরের হারবারে দাস বিকিকিনির ইতিহাস। জানা যায় সতেরো শ এবং আঠারো শ শতকে শুধু এই বন্দর দিয়েই জাহাজ ভরে প্রায় পাঁচ শ হাজার আফ্রিকান দাস নিয়ে আসা হয়। যাদের দিয়ে সেসব কাজ করানো হতো, যা তৎকালীন ব্রিটিশরা করতে চাইত না। শুধু ব্রিটেনেই নয়, তৎকালীন বিশ্বে প্রায় সব শক্তিধর শাসকেরাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন; যার নিদর্শন রোমান, কনস্টাইনটেন, অটোম্যান, মোগল, ফ্রেঞ্চ, পর্তুগিজ কিংবা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাস পাঠ করলে জানা যায়। এই অঞ্চলের দাস ক্রয়–বিক্রয়ের হোতা ছিলেন এডওয়ার্ড কোলস্টোন।