ভয়াবহ হয়ে উঠছে ‘ফণী’,মোংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

ফাইল ছবি

জুমবাংলা ডেস্ক : পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৬ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪.৫ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় আবহওয়া বিভাগের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘ফণী’ আরও ঘণীভূত ও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল শুক্রবার (৩ মে) বিকাল নাগাদ ভারতের ওড়িষা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তীতে ওড়িষা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।

বুলেটিনে জানানো হয়েছে,  এটি আজ  বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমূদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে আগামী ৪ মে সকালে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে গতকাল জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা রংপুর হয়ে দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে। সেই সাথে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে আঘাত হানতে পারে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ঘূর্ণিঝড়টি যে ডেরিকেশন আছে সেই ডিরেকশনে যদি এগোতে থাকে তাহলে এটা প্রথমে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত করবে, এরপর পশ্চিম বাংলায় আঘাত করবে। এরপর দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চল হয়ে সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত করবে।’

‘আর যদি দিক পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে তাহলে খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্র্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে,’ যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।

ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এনডিআরসি প্রতিনিয়ত সংবাদ দিয়ে যাচ্ছে। সিপিসির হেড কোয়ার্টার এবং উপকূলীয় ১৯টি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ছামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র গতিপথ পরিবর্তন হয়ে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানলে তা হবে ভয়াবহ।