আমাদের সূর্য একটা মধ্যবয়স্ক তারা। আকারেও এটি খুব বড় বা ছোট নয়, মাঝামাঝিই বলা চলে। লালদানব তারাগুলো সূর্যের তুলনায় অনেক বড়, লাল বামন নক্ষত্রগুলো আবার অনেক ছোট। তবে শুধু আকার নয়, কী পরিমাণ আলো দিচ্ছে, তাপমাত্রা কতটা—এসবের ওপর নির্ভর করে নক্ষত্রের শ্রেণিবিভাগ করা হয়।
এই আলো বা তাপমাত্রার হিসাবে সূর্য একটি G শ্রেণির তারা। শ্রেণিবিভাগটা এরকম—O, B, A, F, G, K ও M। O শ্রেণির তারাগুলো সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, M শ্রেণিরগুলো সবচেয়ে কম উত্তপ্ত। দেখাই যাচ্ছে, সূর্য এক্ষেত্রে মাঝামাঝি আছে। এর পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ৬ হাজার কেলভিন। এই সব দেখে মনে হতেই পারে, সূর্য একটা গড়পড়তা তারা।
এটা সত্যি নয়। রাতের আকাশে যেসব তারা দেখা যায়, তার ৯৫ শতাংশই সূর্যের তুলনায় কম উত্তপ্ত। পৃষ্ঠ তাপমাত্রা ও উজ্জ্বলতার হিসেবে সূর্য থাকবে প্রথম ১০ শতাংশের মধ্যেই। জীবন ধারণের জন্য এই উত্তাপের প্রয়োজনীয়তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। আমাদের নক্ষত্রটির দিকে তাকিয়ে তাই বিস্মিত হওয়া প্রয়োজন বৈকি!
সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব পরিবর্তনশীল। পৃথিবীর কক্ষপথ যেহেতু উপবৃত্তাকার, তাই এই দূরত্ব ৯১.৩ মিলিয়ন থেকে ৯৫ মিলিয়ন মাইল পর্যন্ত হতে পারে। গড়পড়তা হিসেবে এ দূরত্ব ৯৩ মিলিয়ন মাইল বা ১৪৯ মিলিয়ন কিলোমিটার ধরা হয়। সে যা-ই হোক, দূরত্বের পরিবর্তন এ ক্ষেত্রে, তা মাত্র ৪ শতাংশের মতো। এটুকু পার্থক্যের জন্য ঋতুর মতো বড় পরিবর্তন হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন হয় ঋতুবৈচিত্র্য?
পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর সাড়ে ২৩ ডিগ্রি হেলে আছে। ফলে বছরের কিছু সময় উত্তর মেরু সূর্যের দিকে থাকে, দক্ষিণ মেরু থাকে উল্টো দিকে। কিছু সময় আবার এর উল্টোটা হয়। যে মেরু সূর্যের দিকে থাকে, সে মেরুতে বেশি সূর্যের আলো পড়ে এবং দিনের দৈর্ঘ্য বড় হয়। দিনের দৈর্ঘ্য বড় হলে—দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো পায় পৃথিবীর সে দিকটা; সে কারণে ওদিকে গ্রীষ্মকাল হয়। উল্টোদিকে দিনের দৈর্ঘ্য হয় কম, ফলে সূর্যের আলো ও তাপ পাওয়ার পরিমাণও কম হয়। এ কারণেই হয় শীতকাল। অর্থাৎ ঋতুবৈচিত্র্যের জন্য দায়ী নিজ অক্ষে পৃথিবীর হেলে থাকা ও ঘূর্ণন। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের জন্য ঋতু পরিবর্তন হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।