সৌরজাগতিক গবেষণায় ইনফ্রারেড বর্ণালী বর্তমানে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের অনেক গোপন রহস্য বের হয়ে আসে যা মানুষের চোখে দেখা সম্ভব না।
ইনফ্রারেড হল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের একটি রূপ যা দৃশ্যমান আলোর মতোই তবে এখানে দীর্ঘতরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বৈশিষ্ট্য উপস্থিত রয়েছে। এটার ওয়েভব্যান্ড 0.8 থেকে 1,000 মাইক্রন পর্যন্ত প্রসারিত। এটি ব্যবহার করার সবথেকে বড় উপকারিতা হচ্ছে মহাবিশ্বের উপাদানগুলি এটি সহজে দেখতে সক্ষম যা মানুষের সাধারণ চোখ দিয়ে দেখা অসম্ভব।
রাতের আকাশ থেকে বেশিরভাগ ইনফ্রারেড বিকিরণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে জল এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডের অণুর দ্বারা শোষিত হয়। বায়ুমন্ডলের এ সকল উপাদান এই বর্ণালী ব্যবহার করে সহজে সনাক্ত করা যায় এবং অতিরিক্ত তথ্য পাওয়া যায়।
আসলে মহাকাশের চিত্র সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরার জন্য ইনফ্রারেড বর্ণালী সব থেকে বেশি ভালো কাজ করে। আমরা ইনফ্রারেড তখনি অনুভব করি যখন আগুনের মাধ্যমে অনেক বেশি তাপ আমরা শরীরে অনুভব করি।
মহাবিশ্বের তারার আলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা অস্পষ্ট ধূলিকণার আবরণ সুস্পষ্ট ভাবে বোঝার ক্ষেত্রে ইনফ্রারেড বর্ণালী তরঙ্গদৈর্ঘ্যের গুরুত্ব সব থেকে বেশি। ছায়াপথে আসলে কতটি নক্ষত্র রয়েছে তাদের গঠনরূপ কেমন এবং সময়ের সাথে সাথে কীভাবে পরিবর্তিত হয় এটি ইনফ্রারেড বর্নালের মাধ্যমে আমরা সহজে বুঝতে পারি।
আমাদের নিজেদের মিলকিওয়ে গ্যালাক্সি এবং অন্যান্য অঞ্চলে যেখানে নতুন নক্ষত্র পুরোপুরি ধূলিকণা দ্বারা আবৃত থাকে সেখানে গ্রহের সিস্টেমগুলি কীভাবে কাজ করে সেটা বোঝার জন্য ইনফ্রারেড বর্ণালীর সাহায্য নেওয়া হয়ে থাকে।
ইনফ্রারেড বর্ণালীর মাধ্যমে তারা ধূলিকণার মধ্যে আটকে থাকা উপাদান যেমন কার্বন-ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সিজেন ইত্যাদি শনাক্ত করা যায়। শুধু মহাবিশ্বের গবেষণা নয় পাশাপাশি আমাদের দেহের পরমাণু এবং শস্যের গঠন ইত্যাদি সহজে বুঝতে হলে ইনফ্রারেড বর্ণালীর ব্যবহার অত্যাবশ্যক। মহাবিশ্বের গ্যাসের ভৌত অবস্থা ঘনত্ব তাপমাত্রা বের করা সম্ভব হয় এটির সাহায্যে।
পাশাপাশি ছায়াপথে ধূলিকণা দ্বারা শোষিত তারার আলোর ভগ্নাংশের রেট, ছায়াপথ এর ছোট হওয়া-বড় হওয়া, সৌরজগতের বাহিরের গ্রহের অনুসন্ধান ইত্যাদি কাজে ইনফ্রারেড বর্ণালী অবশ্যই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হাবল টেলিস্কোপ থেকে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এত বেশি সাফল্য পাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে এই ইনফ্রারেড বর্ণালী ।
হাবল টেলিস্কোপের সাথে নাসার নতুন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের ছবির তুলনা
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে মানবজাতি মহাবিশ্বকে নতুন করে জানবে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।