কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা অনুসারে, মহাবিশ্বের কোথাও প্রকৃত শূন্যস্থানের অস্তিত্ব নেই। আপাতদৃষ্টে মনে হওয়া সব শূন্যস্থানে ক্রমাগত আবির্ভূত হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল কণারা। এগুলো সব সময় কণা-প্রতিকণা জোড় হিসেবে আবির্ভূত হয়। ইংরেজিতে বলে ম্যাটার-অ্যান্টিম্যাটার পেয়ার। পরমুহূর্তেই এরা ধ্বংস করে দেয় পরস্পরকে।
এই ঘটনার নাম কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন। এভাবে আবির্ভূত কণা-প্রতিকণা জোড়ের একটি হয় ধনাত্মক শক্তিবিশিষ্ট, অন্যটি হয় ঋণাত্মক শক্তির। ফলে এমন অদ্ভুত ঘটনার পরেও ঠিকই মোটা দাগে অটুট থাকে শক্তির নিত্যতা সূত্র।
ব্ল্যাকহোলের প্রান্ত সীমানা ঘটনা দিগন্তের কাছেও সমান তালে ঘটতে থাকে কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন। এর প্রভাবে অনেক সময় সেখানে এমনভাবে কণা-প্রতিকণা জোড় আবির্ভূত হতে পারে যে ঋণাত্মক শক্তির কণাটি ব্ল্যাকহোলের মহাকর্ষের প্রভাবে বাঁধা পড়ে যায়। কিন্তু ধনাত্মক শক্তির কণাটি ঠিক বেরিয়ে পড়ে ফাঁক গলে।
অর্থাৎ, এমন হতে হলে ঋণাত্মক শক্তির কণার আবির্ভাব ঘটবে ঘটনা দিগন্তের ঠিক ভেতরের অংশে, আর ধনাত্মক শক্তির কণার আবির্ভাব ঘটবে ঠিক বাইরে। বাইরে থেকে এই ঘটনা দেখলে মনে হবে যেন ব্ল্যাকহোল কণা বিকিরণ করছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে হকিং রেডিয়েশন।
আইনস্টাইনের বিখ্যাত E=mc2 সমীকরণ অনুসারে ভর ও শক্তি একে অন্যের সমতুল্য। তাই ঋণাত্মক শক্তির কণা ভেতরে পড়ে যাওয়ার দরুন ব্ল্যাকহোলের ভর খুব সামান্য পরিমাণ হ্রাস পাবে। ফলে কৃষ্ণগহ্বরটি খুব সামান্য হলেও সংকুচিত হবে। প্রায় অনন্তকাল ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে সংকুচিত হয়ে এক সময় বিস্ফোরিত হবে দানবাকৃতির ব্ল্যাকহোলগুলোও। অর্থাৎ, মহাজাগতিক অন্য সব বস্তুর মতো এরাও অমর নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।