রান্নার কাজে মাইক্রোওয়েভ ওভেন সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। দিন দিন এ দেশেও মাইক্রোওয়েভ ওভেন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ওভেন দিয়ে খুব দ্রুত খাবার গরম করা সম্ভব। তাই এতে সময় ও শ্রম—দুটোই বাঁচে। সাধারণ ওভেনে খাবারের বাইরের অংশ গরম হয়। কিন্তু মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সুবিধা হচ্ছে, এটি খাবারের ভেতরেও গরম করে।
মজার ব্যাপার হলো, এই জাদুকরী যন্ত্রটির আবিষ্কার অনেকটা আকস্মিকভাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে রাডার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিলেন মার্কিন প্রকৌশলী পারসি স্পেনসার। তিনি হঠাৎ খেয়াল করলেন, মাইক্রোওয়েভের কারণে তাঁর পকেটের চকলেট বার গলে গেছে। ফলে বুঝতে পারলেন, মাইক্রোওয়েভ দিয়ে কোনো বস্তুকে গরম করা সম্ভব।
বিষয়টি মাথায় রেখে প্রাথমিকভাবে একটি সরল মাইক্রোওয়েভ ওভেন বানান স্পেনসার। সে যন্ত্রে পপকর্ন ভাজা যেত। এর দুবছর পর, ১৯৪৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে মাইক্রোওয়েভ ওভেন বানানো শুরু হয়। শুরুর দিকে ওভেনগুলো ছিল ঢাউস আকৃতির। কিন্তু দিনকে দিন প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এই ওভেনের আকার-আকৃতি ছোট হতে থাকে।
মূলত মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ব্যবহার করা হয় অতিক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোক তরঙ্গ। এই আলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ২.৫ গিগাহার্টজ। বলে রাখা ভালো, ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি এবং রেডিও তরঙ্গের মাঝখানের অংশ হচ্ছে এই মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ। এই তরঙ্গদৈর্ঘ্য কোনো খাবারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলে খাবারের পানি ও চর্বি মাইক্রোওয়েভ থেকে শক্তি শোষণ করে। কিন্তু কীভাবে?
মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করা যায়। পানির অণুতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশ থাকে। এ ওভেনের এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড পানির এই কণাগুলোর দিক খুব দ্রুত পরিবর্তন করতে থাকে। পানির কণাগুলো সাধারণত প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার ৪৫০ মিলিয়ন বার কাঁপে। এই কম্পনের কারণে খাবারের ভেতরের পানি গরম হয়ে যায়। আর তার মাধ্যমে পুরো খাবারটি গরম হয়।
যেসব খাবারে পানি কম থাকে, সেগুলো তুলনামূলকভাবে কম গরম হয়। একই কারণে কাচের গ্লাস কিংবা চিনামাটির প্লেট মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম হয় না। আবার প্লাস্টিক ও কাগজজাতীয় বস্তুর ভেতর দিয়ে মাইক্রোওয়েভ চলে যায় বলে গরম হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।