সম্প্রতি খাদ্যযোগ্য চারাগাছ থেকে পাওয়া মাইক্রোগ্রিনসের ব্যবহার বাংলাদেশে সাড়া ফেলেছে। সাধারণ শাকসবজির চেয়ে প্রায় ৯ গুণ বেশি পুষ্টি মিলবে এ সুপারফুড থেকে। করোনাকালের পর থেকেই আমরা দিন দিন স্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠছি। এখন আমরা সবাই জানি, ভেতর থেকে শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে প্রয়োজন বিভিন্ন নিউট্রিয়েন্ট।
আর এই তাগিদ থেকেই ভেজালমুক্ত ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস পেতে বাংলাদেশের অনেক স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ এই মাইক্রোগ্রিনসকে তাঁদের নিত্যদিনের খাদ্যের তালিকায় নিয়ে এসেছেন। এটি মূলত বিভিন্ন খাদ্যযোগ্য শাকসবজির চারাগাছ।
অত্যন্ত পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই মাইক্রোগ্রিনস আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে পারে বলে নানা সময়ে বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকেরা। ১৯৮০–এর দশকে ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে এই মাইক্রোগ্রিনসের ব্যবহার শুরু হয়। খুব জনপ্রিয়তাও লাভ করে।
দেশে খাদ্যে ভেজাল এখন এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, একজন সচেতন মানুষের পক্ষে চোখ বুজে যেকোনো খাদ্য স্বচ্ছন্দে গ্রহণ করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। আমরা বাজার থেকে শাকসবজি, ফলমূল কিনে খাচ্ছি এই ভেবে যে তা আমাদের শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।
কিন্তু আসলেই কি এ থেকে শরীরের পরিপূর্ণ পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে সবার? অনেক পুষ্টিবিদের মতেই বাজার থেকে যেসব শাকসবজি আমরা কিনে খাচ্ছি, সেগুলো বেশি দিন টাটকা রাখা আর সতেজ দেখানোর জন্য যেসব ফাইটোকেমিক্যালস ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো মানুষের শরীরে ক্যানসারের আক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। এ ছাড়া প্রথাগত রান্নাবান্নার নিয়মে শাকসবজি বেশি করে সেদ্ধ করলে এর অনেক পুষ্টিগুণ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
মাইক্রোগ্রিনস তৈরিতে কোনো কীটনাশক বা সার ব্যবহার করতে হয় না। তাই এতে কোনো ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকছে না।
১. এটি ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।
২. ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর।
৩. পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও কপারসমৃদ্ধ।
৪. এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৬. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
৭. ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৮. এটি পলিফেনল ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক উৎস।
৯. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
১০. আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১১. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, বিষণ্নতা কমায়।
মাইক্রোগ্রিনসের চারা শুধু একবারই ব্যবহারযোগ্য। তাই একবার উৎপন্ন করা হলে, এটা খাওয়ার পর আবারও বীজ বপন করে উৎপাদন করতে হয় পরবর্তী চারা। এর স্বাদ চারার প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। এটি সুস্বাদু বলেই মত দেন সবাই। যদিও অনেকে স্বাদের ক্ষেত্রে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের কাছেই এটি বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।