
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, মামলার অভিযুক্তরা খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন—এ পালানো কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে যুক্তিতর্কের শেষ দিনে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, “একজন প্রধানমন্ত্রী, একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী—উনারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেটা জোর করে হোক বা নির্বাচিতভাবে হোক, যেভাবেই হোক। তাহলে কী এমন ঘটল যে উনাদের পালিয়ে যেতে হলো? কেন তারা দেশ ছাড়লেন? উনারা খুন করেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। যখন জনগণ জেগে উঠেছে, তখনই এই মামলার অভিযুক্তরা পালিয়েছেন।”
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, “এই পালানোকে সাধারণ পালানো হিসেবে দেখা যাবে না। শুধু তাই নয়, তারা এখনো এই বিচার সম্পর্কে অবগত, পর্যবেক্ষণ করছেন, এমনকি বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিচ্ছেন। সুতরাং অভিযুক্তদের নিরপরাধ বলার কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি আদালতের উদ্দেশে বলেন, “একটা দেশে ৩৬ দিনে ১,৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন—সবই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য। আদালতের সামনে যে সাক্ষ্য–প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে, তা বিশ্বের যেকোনো আদালতে উপস্থাপন করলে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সাজা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ থাকবে না।”
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এই বিচার যদি আমরা করতে না পারি, তাহলে আমরা জাতি হিসেবে ভীরু কাপুরুষ হয়ে ইতিহাসে থেকে যাব।”
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এ রকম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ, পুরো প্রজন্মকে হত্যা করে ফেলার চেষ্টা, ৩৫ হাজার মানুষকে আহত করা, অঙ্গহানি করা, এরপরও সামান্যতম অনুশোচনা নেই আসামিদের। রাষ্ট্রের মধ্যে শেখ হাসিনা একটা সিভিল ওয়ার (গৃহযুদ্ধ) লাগানোর চেষ্টা করেছেন। সেনাবাহিনী ও জনগণকে মুখোমুখী দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও জনগণ সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। সুতরাং সর্বোচ্চ শাস্তিটা তার অবশ্যই প্রাপ্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



