 জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে। কমিশন এখন থেকে গুমসহ শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও তদন্ত করতে পারবে। ফলে এ ধরনের ঘটনার জন্য আলাদা কোনো গুম কমিশন গঠনের প্রয়োজন হবে না। এছাড়া, মানবাধিকার কমিশনের আদেশ প্রতিপালন এখন থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন,
“আগের মানবাধিকার কমিশন ছিল কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান। নিয়োগ পদ্ধতির ত্রুটি, এক্তিয়ারের সীমাবদ্ধতা এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এক্তিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে কমিশনের কাঠামো, এক্তিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশনে একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য থাকবেন। নিয়োগে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রার্থীদের বাছাই করে সুপারিশ করবে কমিটি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে। এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যে কোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না।
আসিফ নজরুল বলেন, অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, রায়েরবাজার কবরস্থানে বেশকিছু জুলাই শহিদকে কবর দেওয়া হয়েছে। এসব বেওয়ারিশ লাশ চিহ্নিত করার জন্য তাদের ডিএনএ পরীক্ষা নিয়ে অনেকদিন ধরে কাজ হচ্ছিল। ওখানে আমরা বিদেশি এক্সপার্ট দিয়ে ল্যাব করাব, এখানে বিদেশি এক্সপার্ট এসে কাজ করবেন। এবিষয়ে সামনে আরো ডেভেলপমেন্ট দেখবেন। রায়েরবাজারে ১০০ জনেরও বেশি মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিচয় বের করা একটা বড় ইস্যু।’
প্রেস সচিব জানান, উপদেষ্টা পরিষদের গতকালের বৈঠকে অন্যান্য আলোচনার মধ্যে বননীতি যেটা ১৯৮৪ সালে ছিল, সেটা পরিবর্তন করা হবে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো বনের ভেতরে বিদেশি প্রজাতির গাছ লাগানো যাবে না। এটার সঙ্গে কাঠ আমদানি বাড়ানো হবে, যাতে বাংলাদেশের বন বা গাছের ওপর বেশি ভার না পড়ে।
এছাড়া মানবদেহ সংযোজন আইন নিয়েও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়। এ ব্যাপারে প্রেস সচিব বলেন, এই আইনের অপব্যবহার ঠেকাতে নিবেদিত একটি কমিটি থাকবে, যাতে গরিব মানুষের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অঙ্গ কেনাবেচা রোধ করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।

 


