জুমবাংলা ডেস্ক : উখিয়ায় মাটিভর্তি ডাম্পার চাপায় মর্মান্তিকভাবে বন বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী কামালসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হতে কামাল এবং উখিয়ার কোটবাজার থেকে হত্যাকাণ্ডের সহযোগী হেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫’র মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী।
গ্রেপ্তারকৃত মোঃ কামাল উদ্দিন (৩৯) উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের এবং হেলাল উদ্দিন (২৭) একই ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নূর আলম মাইজ্জার ছেলে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-১৫’র অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, উখিয়ার রাজাপালং ইউপিস্থ হরিণমারা এলাকায় স্থানীয় হেলাল, গফুর ও বাবুলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে। এ চক্রের অধীনে প্রায় ১০-১২টি ডাম্পার ও কয়েকটি মাটিকাটা ড্রেজার রয়েছে। প্রতি ডাম্পার মাটি ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিভিন্নজনের কাছে জমি ভরাটের জন্য বিক্রি করেন। চক্রের মূল হোতারা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা রেখে বাকি টাকা ডাম্পারের মালিকদের গাড়ি ভাড়া ও শ্রমিক খরচ বাবদ পরিশোধ করে দেয়।
তিনি জানান, নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হরিণমারা বন অঞ্চলের দায়িত্বপূর্ণ বিট কর্মকর্তা হওয়ায় গত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালিয়ে পাঁচটি মাটি কাটার ড্রেজারসহ কয়েকটি ডাম্পার জব্দ করে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে বন আইনে কয়েকটি মামলাও দায়ের করেছেন। ফলে অপরাধীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শায়েস্তা করতে পরিকল্পনা করেন।
গত ৩১ মার্চ রাত অনুমান ২টার দিকে পাহাড় কাটার সংবাদ পেয়ে বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ তার আরেক সদস্য মো. আলীকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। স্থানীয় ফরিদ আহম্মদের দোকানের সামনে পৌঁছালে মাটিভর্তি ডাম্পারের ড্রাইভার বাপ্পিকে তার পাশে বসে থাকা কামাল বন কর্মকর্তাকে গাড়িচাপা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরে ঘাতক বাপ্পি মোটরসাইকেল আরোহী সাজ্জাদ ও তার সহযোগীকে গাড়িচাপা দেয়। এতে ড্রাম্পারের চাপায় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই সাজ্জাদ মারা যান এবং সহযোগী মোহাম্মদ আলী আহত হন।
র্যাব-১৫’র অধিনায়ক সাজ্জাদ জানান, এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় র্যাব-১৫ মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কামাল ও হেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামাল ও হেলাল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫’র অধিনায়ক। তাদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।