সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত কৃষক-বিজ্ঞানী সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন নূর মোহাম্মদ। তিনি ২০টি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন, ঝুলিতে রয়েছে মোট ২০০ কৌলিক সারি উদ্ভাবনের কৃতিত্ব। এসব ধান উচ্চফলনশীল, এর কিছু কিছু চাষও হচ্ছে মাঠে। এ সবই তিনি শিখেছেন নিজে নিজে। ২০০৫ সালে ‘কৃষিতে উচ্চফলন’ ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন জাতীয় কৃষি পদক (স্বর্ণ)।
তিনি বলেন, আমাদের বরেন্দ্র এলাকা খরাপ্রবণ। সেখানে ধান চাষ করা কঠিন। প্রতিবছর আমাদের ধান নষ্ট হয়ে যায়। এই ধান রক্ষা করার জন্যই আমি ধান নিয়ে গবেষণা শুরু করি। ২০০৫ সালের পর থেকে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে শুরু করি। উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে উন্নত ধানের জিন সংমিশ্রণ করে আধুনিক ও উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়।
আমার উদ্ভাবন করা ধানগুলো মজবুত, সহজে হেলে পড়ে না, রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম, স্বল্পজীবনকাল (অর্থাৎ দ্রুত ধান হয়), উচ্চফলশীল, সরু, চিকন ও খরাসহিষ্ণু। এই ধানগুলো টানা ২০ দিন পানি না পেলেও খরা মোকাবেলা করতে পারে।
বোরো মৌসুমে এই ধান ১৩০ দিনে পাকে। বাংলাদেশের আর কোনো ধান এত কম সময়ে পাকে না। দেশের প্রচলিত অন্য ধানগুলো পাকতে প্রায় ১৪০/১৫০ দিন লাগে। পোলাও, বিরিয়ানিসহ খিচুড়ি রান্না করা যায়। এটা অবশ্য সুগন্ধি ধান (বা চাল) নয়। আমন মৌসুমে এ ধান হতে ১২৫ দিন লাগে। আর বোরো মৌসুমে লাগে ১৪৫ দিন। এই ধানেও পোকামকড় কম আক্রমণ করে।
বন্যা মৌসুমেও এই ধান চাষ করা যায়। গাছ খাটো হলেও বন্যা শুরু হওয়ার আগে ধান পেকে যাওয়ায় আর সমস্যা হয় না। তিনি আরও বলেন, কৃষিতে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। আমাদের মতো এত ফলন ওদের নেই। খরাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় ফলন কম। ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও চীনের ফলন মোটামুটি ভালো। ওখানে তো ১৭টা দেশের বিজ্ঞানী এসেছিলেন। এর মধ্যে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের কৃষক-বিজ্ঞানীরা ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।