সুলতান মাহমুদ : দিনাজপুরের চিনিরবন্দরে প্রথমবার মাল্টা চাষ করেই সফলতা পেয়েছেন উদ্যোক্তা মাজেদুর রহমান দুলু। ২০১৬ সালের শেষের দিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় অনাবাদি পতিত জমিতে মাল্টার চারা নিয়ে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই ঘোনপাড়ার ৭০ শতক পতিত উঁচু জমিতে ৩৪০টি মাল্টার গাছ লাগিয়ে এখন তিনি এলাকার সফল মাল্টা চাষি হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। এই পতিত জমি প্রস্তুত, রাসায়নিক ও জৈব সার দিয়ে শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত তার সর্বমোট খরচ হয়েছে ২ লক্ষাধিক টাকা। গত এক বছর ধরে তার এই বাগানে তেমন খরচ নেই।
২০১৮ সাল থেকে মাল্টার ফলন আসতে থাকে। ২০১৯ সাল থেকে মাল্টার বাজারজাতকরণ শুরু করেন দুলু। প্রথমবার মাল্টা বিক্রি হয় ৪০ হাজার টাকা। এ বছর মাল্টার যে ফলন হয়েছে, তাতে ২ লক্ষাধিক টাকার অধিক বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করেছেন।
গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা দেখে খুশিতে দিশাহারা চাষি মাজেদুর রহমান দুলু। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় তার সমস্ত খরচ উঠে আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন। দুলুর বাগানের মাল্টা খেতে সুস্বাদু এবং আকার-আকৃতিতে বড় হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
দুলু তার বাগানে বারি-১, ভেরিকেট, ভিয়েতনামী জাতের মাল্টাসহ কিছু কমলাও চাষ করেছেন। গাছে ব্যাপক হারে মাল্টা আসার কারণ হিসেবে তিন জানান, প্রতিটি মাল্টা গাছে তিনি কলম চারার প্লান্টেশন করেছেন। স্থানীয় বাজারসহ বেশকিছু পাইকার বাগান থেকেই মাল্টা ক্রয় করে নিয়ে যান।
মাল্টাচাষি মাজেদুর রহমান দুলু বলেন, ‘আমি কল্পনা করতে পারিনাই যে আমার এই জমিতে মাল্টা চাষ হবে। অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এই মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছি। নিজস্ব কিছু গবেষণা আর ইউটিউব চ্যানেল দেখে মাল্টা চাষ করে আমি সফলতা পেয়েছি। এই মাল্টার বাগান আমি ধীরে ধীরে আরও বড় করছি। আমার এই বাগান দেখে অনেকেই আমার নিকট পরামর্শ গ্রহণ করছে, কীভাবে এই মাল্টার চাষ করে সফলতা পাওয়া যায়।’
বাগানের শ্রমিক হুরমুজ আলী জানান, মাল্টার প্রতিটি গাছে এখন ফলন এসেছে। ফলন আসার আগ থেকে গাছের গোরায় জৈব সার, চায়ের পাতার অবশিষ্ট অংশ ও পরিমাণ মতো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। এখন যেহেতু মাল্টার ভারে প্রতিটি মাল্টার গাছ নুয়ে পড়েছে। এখন শুধু মাল্টা বাগানে আগাছা পরিষ্কার ও পাহারা জোরদার করতে হয়। আগামী অক্টোবর মাস থেকেই মাল্টার বাজারজাত করা যাবে।
স্থানীয় ইব্রাহিম আলী জানান, দুলুর মাল্টা বাগানে এসে মনটা ভরে গেলো। প্রতিটি মাল্টার বাগানে এত মাল্টা ধরেছে। যা আগে কখনও দেখিনি। মাল্টা কেটে খেয়ে দেখা যাচ্ছে স্বাদ আর রসে ভরা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) খালেদুর রহমান জানান, এ বছর দিনাজপুরে ১১৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। প্রতি বছর মাল্টার চাষ বাড়ছে। মাল্টা চাষের জন্য দিনাজপুরের মাটি অত্যন্ত উর্বর। চাষীদের মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বেশকিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। একসময় দিনাজপুরের মাল্টা দিয়ে সারাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে এমন প্রত্যাশা তার। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।