জুমবাংলা ডেস্ক: ইউটিউব দেখে কমলা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে আলমগীর হোসেন নামে এক তরুণ কৃষক। বাণিজ্যিকভাবে চায়না-থ্রী জাতের কমল চাষ করছেন তিনি।
প্রথমবার চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন আলমগীর। গাছে-গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে পাকা রসালো কমলা। এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই এখন তার কমলা বাগান দেখতে আসছেন। দেখতে এসে গাছ থেকে পাকা কমলা কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
আহসান হাবিব নামে একজন দর্শনার্থী জানান, ‘সারাজীবন আমরা বাজার থেকে কমলা ক্রয় করেছি। তবে আজ কমলা বাগান থেকে দেখে দেখে পাকা কমলা ক্রয় করলাম। এটা অন্যরকম এক ভালো লাগা।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক আলমগীর হোসেন তার দুই বিঘা জমিততে ১৮৫টি কমলা গাছ রোপণ করে বাগান গড়ে তুলেছেন। ইউটিউব দেখে বাগানের পরিচর্যা করে ভালো ফলনও পেয়েছেন তিনি।
আলমগীর জানান, ‘ইউটিউবে চুয়াডাঙ্গার এক কৃষকের কমলা আবাদের ভিডিও দেখে তার সাথে যোগাযোগ করি। পরে ওই বাগান পরিদর্শন করে পরামর্শ নিয়ে সেখান থেকে চায়না-থ্রী জাতের কমলার চারা এনে বাগানে রোপণ করার মাত্র দুই বছরের মাথায় ফলন পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১ হাজার থেকে ৫শ কেজি কমলা বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি কমলা ১৭০ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বাগান থেকে ক্রেতারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয়নি। দর্শনার্থীরা এসে দেখে বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগান করার সময় গ্রামের অনেকেই বলেছিলেন এ এলাকায় কমলার চাষ হবে না। আমি মানুষের কথায় কান না দিয়ে নিজের মত করে চেষ্টা করেছি। আমার বাগান থেকে অন্তত ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’
এদিকে কৃষক আলমগীর হোসেনের কমলা চাষ দেখে এবার অন্য কৃষকরাও কমলা চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এলাকার অনাবাদি জমিতে এবার কমলা চাষ করতে আগ্রহী। স্থানীয় কৃষক মোস্তফা মিয়া জানান আমরা এখন বুঝতে পেরেছি, কমলা লাভজনক ও ফলনে ভালো হয়। আগামী মৌসুমে কমলা চাষ করার কথা জানান এ কৃষক।
বিজয়নগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, একাধিকবার পরীক্ষামূলকভাবে এ অঞ্চলে কমলার চাষ করেও সুফল পায়নি কেউ। তবে যেহেতু আলমগীর হোসেন সফল হয়েছেন, তাই কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ অঞ্চলে কমলার আবাদ বৃদ্ধির জন্য প্রর্দশনী দেয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কমলা গুলো সাধারণত টক হয়। যেহেতু বিজয়নগরে আলমগীর হোসেনের উৎপাদিত কমলাগুলো মিষ্টি। আমরা তার বাগান থেকে কমলার চারা উৎপাদন করব। পাশাপাশি কমলা চাষ করে আবাদ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।