আব্দুর রহমান: বিনয়ী আর হাস্যোজ্জ্বল এক ক্রিকেটারের পরিচয় জানতে চাইলে সবার আগে যার নাম আসে তিনিই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনিই বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরির ইতিহাস গড়েন । ইতিহাসের মাত্র অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরির মালিক রিয়াদ।দলের বিপদে হাল ধরার জন্য ভক্তদের কাছে পরিচিত হয়েছেন ‘মিস্টার রিলায়েবল’ হিসেবে।
কিন্তু হঠাৎ কি হলো রিয়াদের? সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের অন্যতম অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের ফর্মহীনতার কারণে বড় মাশুল গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। যার ফলে তাঁর সক্ষমতা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। বাংলাদেশ দলে কী তাহলে সময় ফুরিয়ে আসছে তাঁর!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩ রানে ফেরা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় ম্যাচে সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন মাত্র ৬ রান। ব্যাট হাতে নিয়মিত ব্যর্থ হচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু এর চেয়ে বড় চিন্তার বিষয় মিডল অর্ডারে তাঁর দায়িত্ব পালনের ধরণ। আর এসব কারণে দল এবং দলের বাইরে শোনা যাচ্ছে যে কোনো সময় তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। তবে তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষকে শতবার ভাবতে হবে। ভাবতে হবে দলে তাঁর অবদানের কথা।
জানা যায়, ফর্মহীনতার কারণে বিশ্বকাপের বাংলাদেশের তৃতীয় ম্যাচের পর রিয়াদকে একাদশের বাইরে রাখতে বলেছিলেন সাকিব, কিন্তু মাশরাফি তা করেননি।
দলের সূত্রে জানা যায়, ‘সাকিবের মতে, মাহমুদউল্লাহ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে জেতার কোনো অভিপ্রায় দেখায়নি। ৪১ বলে মাত্র ২৮ রানের ইনিংস খেলেছে সে, যেখানে বাংলাদেশের ২০ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯০ রানের মতো। সেই সময় ড্রেসিং রুমের সবাই বিশ্বাস করেছিল এই রান তাড়া করা সম্ভব। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের ধরণ জেতার জন্য ছিল না এবং এটা মেনে নিতে পারেনি সাকিব।’
তবে রিয়াদকে দল থেকে বাইরে রাখার আগে তাঁর ফর্মহীনতার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তাঁর মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে। তা করতে না পারলে রিয়াদের অনুপস্থিতির মাসুল দলকেই বেশি দিতে হবে। কারণ রিয়াদ বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের অনেক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
২০০৭ সালে অভিষেক হয় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। তিনি এমন একজন ব্যাটসম্যান যিনি মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে পারেন আবার হাত ঘুরিয়ে ভালো স্পিন বল করতে পারেন।
২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতায় বড় ভূমিকা ছিল রিয়াদের। রিয়াদ সম্পর্কে সাবেক ক্রিকেটাররা বলেছেন “সে ফিনিশার, ভালো খেলা এক জিনিস আর ম্যাচ জিতিয়ে নিয়ে আসা ভিন্ন জিনিস। রিয়াদ ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেন। এমন খেলোয়াড় সহজেই পাওয়া যায় না।’
রান রেট বাড়ানোর ক্ষেত্রে রিয়াদ ভূমিকা পালন করেন, পাঁচ বা ছয় নম্বরে নেমে ১০ বা ১৫ ওভার পান এবং সেটা রিয়াদ ভালোই করেন।
জানা যায়, ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহকে ছয় নম্বরে খেলানোয় বেশ অসন্তুষ্ট তিনি। উপরে ব্যাটিং করার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর, বিশ্বাস করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পুরো বিশ্বকাপ এই মানসিকতা নিয়েই পার করেছেন তিনি। যার বিপরীত প্রভাব পড়েছে তাঁর ব্যাটিংয়ে।
আরও কিছু ঘটনা এটাই প্রমাণ করে, মাহমুদউল্লাহ সঠিক মানসিক অবস্থায় নেই। আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উচিৎ হবে রিয়াদের মানোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করা। সে যে পজিশনে খেলতে পছন্দ করে সেখানে তাকে খেলার সুযোগ করে দেয়া। সাকিববে ওয়ান ডাউনে খেলার সুযোগ দিতে পারলে রিয়াদের বেলায় উপরে ব্যাটিং করার সুযোগ দিতে সমস্যাটা কোথায়?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।