জুমবাংলা ডেস্ক : শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল এবং তাদের পরিচয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করার খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে মঙ্গলবার রাতে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
অধ্যাদেশ সূত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের (এমএনএ-এমপিএ) মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাদেশে মুজিবনগর সরকারকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুসহ মুজিবনগর সরকারের অন্যদের মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা বাতিলের বিষয়ে যা বলা হচ্ছে, সেটি সঠিক নয়।
মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন। যারা সশস্ত্রভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, যারা পরিচালনা করেছেন, তারা মুক্তিযোদ্ধা। গণমাধ্যমে মিসলিডিং হয়েছে। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন, যোগ করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ কূটনীতিকরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। সহযোগী মানে এটা নয় যে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের সংশোধিত অধ্যাদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
উপদেষ্টা আরও জানান, ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা ছিল, সেটাই তারা বাস্তবায়ন করেছেন। ২০১৮ ও ২০২২ সালে এটা পরিবর্তন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দুইয়েরই সম্মান, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা একই থাকবে। জাতিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধ না করলে আমরা স্বাধীন হতাম না। মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে গৌরব আমাদের জাতির ইতিহাসে আর হয়নি।
শেখ মুজিবসহ চার নেতাকে আইনে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়নি: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা
FAQs
মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি বাতিল মানে কী?
এর মানে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী আগে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, তাদের সেই স্বীকৃতি বাতিল করে নতুনভাবে সহযোগী হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।
এই পরিবর্তনের পেছনে কারণ কী?
সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে ১৯৭২ সালের প্রেক্ষাপটে। উদ্দেশ্য ইতিহাসকে বিকৃত না করে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা।
বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা কি রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন?
হ্যাঁ, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে আর্থিক বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকবে, যদিও মর্যাদার দিক থেকে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পরিবর্তন হতে পারে কি?
যেহেতু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে এবং রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে, ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুজিবনগর সরকারের নেতা ও কর্মকর্তাদের মধ্যে পার্থক্য কী?
নেতারা যুদ্ধ পরিচালনায় ছিলেন এবং তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাখা হয়েছে, তবে বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহযোগী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।