আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একজন মুসলিম মা ও তার মেয়ে বুরকিনি (পুরো শরীর আবৃত বিশেষ সাঁতারের পোশাক) পরায় কানাডার একটি ওয়াটার পার্কে তাদের সাঁতার কাটতে দেওয়া হয়নি। ম্যানিটোবা প্রদেশের রাজধানী উইনিপেগে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, মা হালিমা জেলুল, তার স্বামী এবং দুই মেয়ে রিসোর্টে একটি রুম বুক করেছিলেন। সেখানে গেলে পরিবারটিকে বলা হয় তারা পুলে বুরকিনি পরে সাঁতার কাটতে পারবেন না।
বুরকিনি নারীদের বিশেষ সাঁতারের পোশাক, যেটি পরলে শরীরের বেশিরভাগ ঢেকে থাকে।
হালিমা বলেন, ‘রিসোর্টের মালিক আমাদের বলেন, বুরকিনি পরার কারণে আমি এবং আমার মেয়েকে পুলে নামার অনুমতি দেওয়া যাবে না। শুনে আমার মেয়ে কাঁদছিল। আমাদের জন্য এটি কোনো সুখকর ঘটনা ছিল না। ’
হালিমা আরো বলেন, ‘প্রতিনিয়তই সৈকতে আমাদের এ রকম অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে। মানুষ আমাদের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে থাকে যেন তারা কিছু বুঝতে পারছে না। দেখছে দেখুক। কিন্তু তাদের বিষয়টা বোঝা উচিত। ’
হালিমার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সালমা দৌইদা বলে, ‘অবশ্যই আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। তবে এ ঘটনায় আমি বিস্মিত হইনি। ’
সে আরো যোগ করে, ‘মুসলিম নারীসহ যে কারো শালীন পোশাক পরার অধিকার রয়েছে। ‘
জানা গেছে, পরে সমস্যা সমাধানের জন্য একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শককে ডাকা হয়। পরিদর্শক যখন জানান বুরকিনি পরে পুল বা ওয়াটার পার্কে প্রবেশ করা জনস্বাস্থ্য নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, তখন পরিবারটিকে পুলে নামার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তারা রিসোর্ট থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এদিকে রিসোর্টের মালিক ড্যান মানাইগ্রে বলেছেন, তিনি বুরকিনি সম্পর্কে জানতেন না, তাই পরিবারটিকে পুলে নামার অনুমতি দেননি। তিনি ভেবেছিলেন এটি রাস্তায় পরার পোশাক এবং এটি যদি পুলে পরা হয় তবে জনস্বাস্থ্য নিয়মের লঙ্ঘন হবে।
মানাইগ্রে আরো বলেছেন, ‘আমি পরিবারটির কাছে ক্ষমা চাইতে চাই, কারণ আমি এ বিষয়ে জানতাম না। ’
২০১৬ সাল থেকে ফরাসী সংস্কৃতি ও সমাজের ঐতিহে্যর পরিপন্থী এ যুক্তি দেখিয়ে ফ্রান্সে সৈকত এবং সুইমিং পুলে মুসলিম নারীদের বুরকিনি পরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে এই নিয়ম ইউরোপীয় দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এবার কানাডায়ও এটি অনুসরণের চেষ্টা করা হলো। তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ফরাসীভাষী জনগোষ্ঠী অধু্্যষিত কুইবেক প্রদেশে বুরকিনির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সূত্র : আনাদোলু
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।