জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট বাইপাস সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা ও দুই বোনকে হারানো ছোট্ট মন্টি (১০) মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মা কণিকা এখনও জানেন না পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তার জীবনসঙ্গী ও আদরের দুই ধন।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে (২৮ নম্বর ওয়ার্ড) গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য।
হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হলেও দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। ব্যাংক কর্মকর্তাকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। উনাকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। জিসিএস-৩ পর্যায়ে ছিলেন তিনি। আমরা মূলত জিসিএস-১৫ থেকে ১৮ এর মধ্যে থাকলে তাকে স্বাভাবিক বলি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান টিংকুর স্ত্রী ও তার ছেলে মন্টির শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, কণিকা ভালো আছেন। উনার পা ও হাতে দুটি ফ্র্যাকচার আছে। জিসিএস-১৫ পর্য়ায়ে। তবে তার ছেলের ব্রেনে পানি জমে প্রেশারের মধ্যে আছে ব্রেনটা। যার জন্য তার অবস্থা খারাপ।
এ সময় হাসপাতালের বাইরে সাইফুজ্জামান টিংকুর পরিচিত অনেককে দেখা গেলেও তখনও ( দুপুর ২টা) হাসপাতালে এসে পৌঁছাননি তাদের কোনো স্বজন।
বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সাইফুজ্জামান তার পরিবার নিয়ে বান্দরবান গিয়েছিলেন বেড়াতে। আজ তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে প্রাইভেটকারে ঢাকায় ফিরছিলেন। বান্দরবান থেকে তাদের ঢাকার মিরপুরে যাওয়ার কথা ছিল। ওই প্রাইভেটকারটি ফৌজদারহাট বাইপাস সড়কে এলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী একটি লরি তাদের প্রাইভেটকারে ধাক্কা দেয়।
তিনি বলেন, নিহত সাইফুজ্জামান স্যারের পরিবার চাঁদপুর থাকেন। তারা হাসপাতালে আসছেন। তবে চট্টগ্রামে তাদের কোনো স্বজন না থাকায় আমরা এসেছি।
এদিকে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার এসআই কাউসার বলেন, নিহত সাইফুজ্জামান মিন্টুর বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। তারা বান্দরবান থেকে ঢাকার মিরপুরের বাসায় ফিরছিলেন। সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেপরোয়া লরির ধাক্কায় দুটি প্রাইভেটকার দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান সাইফুজ্জামান এর দুই কন্যা তাসরিন (১৩) তাসপিয়া (১৪)। লরিটি ড্রাইভাইসহ আটক করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেটকার দুটি থানায় নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, সাইফুজ্জামান সপরিবারে প্রাইভেটকারে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট এলাকায় একটি লরি প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ওই কর্মকর্তার দুই কিশোরী মেয়ে নিহত হয়। আহত অবস্থায় সাইফুজ্জামান-কণিকা দম্পতিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সাইফুজ্জামান মারা যান।