জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁদপুরের মেঘনায় সারবাহী এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে জেলার হাইমচর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে এই মামলা করেন জাহাজটির মালিক মাহবুব মোর্শেদ। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অপর জাহাজ এমভি মুগনির মাষ্টার বাচ্চু মিয়াসহ ৯ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানার জেটি থেকে ইউরিয়া সার নিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় জাহাজটি। জাহাজে মোট ৯ জন লোক ছিল।
জাহাজটির গন্তব্যে পৌঁছার কথা ছিল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে। কিন্তু সকাল থেকে জাহাজের মাষ্টার মো. সালাহউদ্দিনসহ অন্য স্টাফদের ফোনে কল দিলেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় একই পথে থাকা এমভি মুগনি নামে অপর একটি জাহাজের মাষ্টার বাচ্চু মিয়াকে ফোন করে ওই জাহাজেদের স্টাফারদের খোঁজ রাখতে বলা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুরে হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে ঈশানবালা খালের মুখে সারবাহী জাহাজ এমভি আল বাখেরাকে দেখতে পান মাষ্টার বাচ্চু মিয়া। তিনি ওই জাহাজে উঠে দেখতে পান এমভি আল বাখেরার সব স্টাফ মৃত ও অর্ধমৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
মাস্টার বাচ্চু মিয়া বিষয়টি জাহাজ মালিক মাহবুব মোর্শেদকে জানান। এরপর মাহবুব মোর্শেদ জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করেন। সংবাদ পেয়ে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা ৭ জনকে মৃত ও একজনকে জীবিত পায়।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, প্রত্যেকের মাথা, গলা ও মুখমন্ডল জখম ও রক্তাক্ত ছিল। তবে ইরফান নামে একজন স্টাফ নিখোঁজ রয়েছেন। মামলা সম্পর্কে হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন সুমন জানান, চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনা তদন্ত করতে এরই মধ্যে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এছাড়া চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, কোস্ট গার্ড জেলা ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে আলাদাভাবে ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই খুনের ঘটনায় এখনও কেউ ধরা পড়েনি। ঘটনার কোনো কিনারা করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে এ ৭ জনের নিথর দেহ নিয়ে একদিন পর স্বজনরা বাড়ি ফিরেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারেরর সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।
সঙ্গে জেলা প্রশাসন নিহতদের প্রতি পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এদিকে নৌযান শ্রমিকরা নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সরকারের কাছে আল্টিমেটাম দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।