ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী হিসেবে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত বেগম খালেদা জিয়া। এ ছাড়া দেশের ইতিহাসেও প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

নারীর অধিকারের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেওয়া এক রক্ষণশীল আইকন ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নারী শিক্ষার উন্নয়নে তার যে অবদান, তা বাংলাদেশ যুগে যুগে স্মরণ রাখবে। তিনি প্রথম চিন্তা করেছিলেন মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি দেওয়ার। নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সেই উপবৃত্তি পরবর্তীতে ধাপে ধাপে একদম বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন এবং যা একেবারেই ‘যুগান্তকারী’ সিদ্ধান্ত।
১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ তার শাসনামলে তার গৃহীত সুদূরপ্রসারী নীতি ও পদক্ষেপগুলো নারী উন্নয়নের ইতিহাসে এক সোনালী অধ্যায় রচনা করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও তিনি নতুন মাত্রা এনেছিলেন। তার শাসনামলে বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন পাস করা হয়। মেয়েদের উপবৃত্তি দেওয়া শুরুও হয় তার শাসনামলে।
জানা গেছে, ১৯৯১-৯৬ শাসনামলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার নারী শিক্ষার প্রসারে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। প্রথমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং পরবর্তীকালে ডিগ্রি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দেওয়া হয়। মেয়ে শিশুদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে শিক্ষা উপবৃত্তিও চালু করা হয়। দরিদ্র শিশুদের শিক্ষার জন্য তার সরকার ‘শিক্ষার জন্য খাদ্য’ নামে এক বৃহৎ কর্মসূচিও চালু করেন।
শিক্ষাবান্ধব খালেদা জিয়া সরকারের নীতির কারণে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের স্কুল পর্যায়ে ছেলে ও মেয়েদের অনুপাত ৫২:৪৮-এ উন্নীত হয়। ২০০৬ সাল নাগাদ তা ৫০:৫০ হয়ে যায়।
বেগম খালেদা জিয়ার এসব অবদানের কথা স্বরণ করে কিছুদিন আগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেছিলেন, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে মেয়েদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছেন। উপবৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তখন অনেকে আমাকে বলেছিলেন মেয়েদের ফ্রি লেখাপড়া হচ্ছে, ছেলেদের কী হবে?
‘তখন আমি খালেদা জিয়াকে বিষয়টি বললাম, এর উত্তরে তিনি বলেন- আজকে যেসব মেয়ে লেখাপড়া করছে তারাই একদিন মা হবেন। যে পরিবারে মা শিক্ষিত সেই পরিবারের সন্তান শিক্ষিত হয়। তার এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত মা-বোনদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


