আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তার দুই হাত, এক পা আর একটা চোখ কেড়ে নিয়েছে বোমা৷ কোমা থেকে ফিরে মনে হয়েছিল- এই জীবন রেখে কী লাভ! সেই হুয়ান হোসে ফ্লোরিয়ান ‘মোচোম্যান’ হয়ে খুঁজে পেয়েছেন জীবনের নতুন মানে।
২০১১ সালের ১২ নভেম্বর৷ কলম্বিয়ায় তুমুল গৃহযুদ্ধ চলছে৷ প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল সান্তোস ফার্স বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে পাঁচ দশক ধরে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানের চেষ্টা করে চলেছেন আপ্রাণ৷ ফ্লোরিয়ানের জীবনে সেদিনই নেমে আসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়৷
বড় ভাই সেনা সদস্য বলে কৈশোরে তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ফার্স বিদ্রোহীরা৷ পরিবারের সবাই পড়েছিল ডানপন্থিদের হামলায় নিহত হওয়ার আশঙ্কায়৷ সেনা সদস্যের ছোট ভাই ফ্লোরিয়ান যে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফার্স-এ যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে, তা তো ডানপন্থিরা বুঝতো না৷ বরং পরিবারের ইচ্ছায় ফার্স-এ যোগ দিয়েছে ধরে নিয়ে মা-কেও হয়ত মেরে ফেলতো৷
তবে ২০১১ সালের ওই সময়টায় ডানপন্থিদের হামলার ভয় আর ছিল না৷ ফার্সের ঘাঁটি থেকে পালিয়ে এসে ফ্লোরিয়ানও তখন যোগ দিয়েছেন সেনাবাহিনীতে৷ ফার্স-এর সদস্যরা এসেছিল চাঁদা চাইতে৷ মা দেননি৷ আর তাতেই যে এত বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে কে জানতো!
২০১১ সালের ১২ নভেম্বর বাড়ির সামনে এসে দেখেন সুন্দর একটা প্যাকেট৷ নীচু হয়ে ধরতে যাবেন, অমনি বিকট শব্দে বিস্ফোরণ৷ মুহূর্তে ঘরের বড় একটা অংশ মিশে গেল মাটিতে৷ ফ্লোরিয়ান অবশ্য তা দেখেননি৷ দেখবেন কী করে, দু হাত আর এক পা-সহ অনেকটা অংশ উড়ে যাওয়ার পর শরীরের যা বাকি ছিল তা-ও পুড়ে প্রায় ছাই৷ হাসপাতালে কোমায় ছিলেন ১২ দিন৷
ফার্সের পেতে রাখা বোমার আঘাতে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে মনে হয়েছিল এই জীবন না রাখাই ভালো৷ বড় ভাইকে ডেকে ফ্লোরিয়ান বলেছিলেন, ‘‘প্লিজ, মাথায় বন্দুক ধরে গুলি করে শেষ করে দাও আমাকে৷”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।