স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীর মেয়ে সানা। সানার এই ‘রাজনৈতিক’ পোস্ট ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে স্যোশাল মিডিয়া। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামলা দিতে মুখ খুললেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তিনি বললেন, ওকে (সানা) জড়াবেন না। রাজনীতি সম্পর্কে জানার ব্যাপারে তার মেয়ে সানা যে খুবই ছোট।
কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, ওই পোস্টটি সানার নিজস্ব কোনো মন্তব্য নয়, সবটাই খুশবন্ত সিংহের লেখা থেকে উদ্ধৃত। ইনস্টাগ্রামে সেই ‘উদ্ধৃতি’ পোস্ট করেই সাড়া ফেলে দিয়েছেন সানা গাঙ্গুলী। কারণ, ওই উদ্ধৃতিটা কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারকে কটাক্ষে ঠাসা। বুধবার দুপুরে সানার ‘রাজনৈতিক’ পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলে। যদিও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয় কিন্তু, তা যে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক তথা বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলীর। এর পরেই ময়দানে নামেন তিনি।
টুইটে তিনি লেখেন, ‘এই সব বিষয় থেকে সানাকে দয়া করে দূরে রাখুন। এই পোস্টটা সত্যি নয়। রাজনীতির কিছু সম্পর্কে জানার ব্যাপারে ও খুবই ছোট।’ অবশ্য, নিজের পোস্টে নিজস্ব কোনো মন্তব্য করেননি সদ্য আঠারো পেরনো সানা গাঙ্গুলী। সানা সেই বই থেকে তুলে ধরেছেন যে অংশ, সেখানে লেখা হয়েছে, ‘প্রতিটা ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা দল বা গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়। নিজেদের বেড়ে ওঠার জন্য তারা ওই দল বা গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করতে তাদের শয়তানেও পরিণত করে। দুএকটা দল দিয়ে এটা শুরু হয়। কিন্তু সেটা কখনোই সেখানে শেষ হয় না। ঘৃণার ওপর নির্ভর করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন নিজেকে ধরে রাখতে পারে অবিরাম একটা ভয় বা দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি করে।’
খবরে বলা হয়, সানা এই উদ্ধৃতির মাধ্যমে আসলে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারকেই নিশানা করতে চেয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত। এখানেই থেমে থাকেননি সানা। খুশবন্তের লেখার আরও কিছু অংশ তিনি পোস্ট করেছেন। সেই অংশে লেখা হয়েছে, ‘আজ যারা আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি, ভাবছি আমরা তো মুসলমান বা খ্রিস্টান নই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছি। সঙ্ঘ ইতিমধ্যেই বামপন্থী ইতিহাসবিদ এবং পশ্চিমি সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী যুবসমাজকে টার্গেট করেছে। কাল তাদের ঘৃণা গিয়ে পড়বে স্কার্ট পরিহিত নারী, যারা মাংস খান, মদ্যপান করেন, বিদেশি সিনেমা দেখেন, বছর বছর তীর্থে যান না, দাঁতনের পরিবর্তে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন, আয়ুর্বেদিকের বদলে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ পছন্দ করেন, দেখা হলে ‘জয় শ্রী রাম’ বলার বদলে হাত মেলান বা চুম্বন করেন, তাদের ওপর। কেউ নিরাপদ নয়। ভারতকে বাঁচাতে হলে এগুলো আমাদের ভীষণ ভাবে অনুধাবন করতে হবে।’
এখানেই থামেননি সানা। জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ ধরে দেশের কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিক্ষোভ-প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠছে তার একটি মানচিত্রও পোস্ট করেন তিনি। সম্প্রতি পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ এখনও থামেনি। বরং রাজধানী দিল্লিতে পরিস্থিতি এতটাই সহিংস হয়ে উঠেছে যে, তা থামাতে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।