জুমবাংলা ডেস্ক: যশোর জেলায় খেজুরগুড় বিক্রি করে ১৩হাজার গাছি লাভবান হয়েছেন বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ জেলার রস-গুড়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে খেজুরের রস ও গুড়কে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানান গুড় উৎপাদনকারী একাধিক গাছি।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক দীপংকর দাশ জানান, বিশুদ্ধ খেজুর রস-গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যে রস আহরনের মৌসুম শুরু থেকে জেলার ৬০ গাছিকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া গাছিদের আধুনিক পদ্ধতিতে রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিশুদ্ধ গুড় উৎপাদন পর্যন্ত যে যে উপকরণ লাগবে তা বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। দেশের মধ্যে যশোরে এ ধরনের প্রশিক্ষণ ও গাছিদের মধ্যে উপকরণ সরবরাহের বিশেষ উদ্যোগ এ প্রথম বলে তিনি জানান।এ জেলার খেজুর গুড়ের চাহিদা দেশে ও বিদেশে বেশি থাকায় এখানে বিশুদ্ধ গুড়ের বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খেজুর গুড়ের বিশুদ্ধতার জন্য গাছিদের মাঝে মাস্ক, হাতের গ্লাভস, অ্যাপ্রন, টিশার্ট ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে। গুড় যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকে সে লক্ষ্যে স্বচ্ছ প্যাকেট সরবরাহ করা হয়েছে।গুড় উৎপাদকরদের সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় মোট খেজুর গাছের সংখ্যা ১৬লাখ ৪১হাজার ১৫৫টি।এর মধ্যে রস উৎপাদিত হয় এমন খেজুর গাছের সংখ্যা ৩লাখ ৪৯হাজার ৯৫৫টি।এসব খেজুর গাছ থেকে বছরে ৫কোটি ২৪লাখ ৯৩হাজার ২৫০ লিটার রস উৎপাদিত হয়।বছরে গুড় উৎপাদিত হয় ৫২লাখ ৪৯হাজার ৩২৫ কেজি। যার মূল্য একশ কোটি টাকার উপরে।বর্তমানে জেলার ৮ উপজেলায় গাছির সংখ্যা ১৩হাজার ১শ’৭৩জন।
সূত্রে আরো জানা যায়, যশোরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে গুড়-পাটালি বিক্রি করে থাকে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর বাঘারপাড়ার ১৬০ জন গাছির সঙ্গে চুক্তি করেছি।তাদের মধ্যে ৭০-৭৫ জন আমাদের গুড়-পাটালি সরবরাহ করছেন। ইতোমধ্যে আমরা তিন হাজার কেজির বেশি গুড়-পাটালি বিক্রি করেছি।ঢাকা ও সিলেটে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া দেশের প্রায় সব জেলাতেই আমরা গুড় পাঠিয়েছি। আরও অর্ডার রয়েছে।এ জেলার গুড় বিক্রিতে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
জেলার খাজুরার গাছি জয়নাল হোসেন ও লিয়াকত আলী বলেন, এখানকার খেজুর গুড়ের চাহিদা দেশ-বিদেশে সর্বত্র রয়েছে। দুই দশক আগেও খাজুরা অঞ্চলে প্রচুর খেজুরের গাছ ছিলো।বর্তমানে আগের তুলনায় গাছ অনেকটা কমে গেছে।সরকারি উদ্যোগে নতুন করে খেজুরের চারা গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেয়ায় গাছিদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এক ভাড় খেজুর রস একশ’ থেকে দেড়শ টাকায় এবং এককেজি বিশুদ্ধ গুড় ২৫০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এ ছাড়া নারিকেল দেয়া পাটালির দাম ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা বলে তারা জানান। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।