জুমবাংলা ডেস্ক: অ্যাপসভিত্তিক রাইডশেয়ার উবার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর পর প্রতিষ্ঠানটির নামের সঙ্গে দুর্নাম যুক্ত হচ্ছে।
উবার চালকেরা ভাড়া আদায়ে অভিনব জালিয়াতি, চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন- এমন অভিযোগও বিস্তর।বিপরীতে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এমনই অভিনব প্রতারণার অভিযোগে গত ২২ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম থানায় এমএম গোলাম শওকত নামে এক যাত্রী উবারের ট্যাক্সিচালক জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।ভুক্তভোগী শওকত ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি মৃত সিরাজুল ইসলাম মৃধা এবং রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদা সিরাজের ছেলে। গোলাম শওকত নিজেও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জিডি সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে গোলাম শওকত রাজধানীর গুলশান-২, রোড নং ৫৯ থেকে গাবতলীর উদ্দেশে উবার সার্চ (০১৯৪১৮৪১০০১) করেন। দ্রুত সময়ে চালক জালাল উদ্দিন সাদা রঙের প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-২৭-৪১৭৮) নিয়ে বাসার সামনে হাজির হন এবং ০১৩০৫-৬৪৩০১৫ নম্বর থেকে কল করেন।
মালামাল নিয়ে জালালের গাড়িতে যাত্রা করেন শওকত। গাবতলী পৌঁছে ভাড়া পরিশোধ করে মালামাল নামাতে থাকেন। এরই মধ্যে মূল্যবান কাগজপত্রসহ নগদ ১ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ব্রিফকেস চালকের সামনের সিট থেকে নামানোর আগেই জালাল উদ্দিন গাড়ি টান দেন। ধাওয়া করেও শওকত সেটি ধরতে ব্যর্থ হন।
পরে উবারে ব্যবহৃত চালকের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ হয়নি। পরে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক উবার কর্তৃপক্ষকে জানান গোলাম শওকত। অথচ এখন পর্যন্ত উবার কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ তার।
শুক্রবার পরিবর্তন ডটকমকে গোলাম শওকত বলেন, ‘ঘটনার পরপরই উবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। এর পরদিন দারুস সালাম থানায় জিডি (নং-৯৪৪) করি। কিন্তু, এখন পর্যন্ত খোয়া যাওয়া মালামাল পাইনি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার মতো অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন। অভিযোগ করলেও উবার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। যাত্রীরা আমরা কেউই ভ্রমণে নিরাপদ থাকছি না।’
ডিজি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দারুস সালাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাহবুবুর রহমান জানান, তদন্তের স্বার্থে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই চালকের যাবতীয় তথ্য চেয়ে উবার কর্তৃপক্ষকে তারা ই-মেইল করেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।
তবে উবার চালক জালাল উদ্দিনের ব্যবহৃত বাংলালিংক অপারেটরের দুটি সিম কার্ডের নম্বর রেজিস্ট্রেশনে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে— কামাল উদ্দিন, পিতা- নাছির উদ্দিন, মাতা- মনোয়ারা বেগম, বাসা-হোল্ডিং- ২৭১, সড়ক- ৯৯৯, ওয়ার্ড নং- ১৬, নিউমার্কেট- ১২০৫, ধানমন্ডি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখান থানার চাউলতা তলি।
গ্রামীণ সিমের নম্বর রেজিস্ট্রেশন রয়েছে— নুর নাহার বেগম, পিতা- আব্দুল গণি, মাতা- আছিয়া বেগম, হোল্ডিং- ৮৪, রাস্তা- ৯৯৯, ওয়ার্ড- ৪, গুলশান- ১২১২, বাড্ডা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
আর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয়ে চালক জালাল উদ্দিনের পরিচয় ও ঠিকানা রয়েছে— জালাল উদ্দিন, পিতা- নাছির উদ্দিন, হাউজ নং- ৩, ব্লক- ডি, ওয়ার্ড- ৭, বাজার রোড।
এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার এএসআই মাহাবুবুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত চালকের সবক’টি নম্বর বন্ধ। তারপরও তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’
এ বিষয়ে উবারের জনযোগাযোগ সংস্থা বেঞ্চমার্ক পিআর এর প্রধান পরামর্শদাতা আশরাফ কায়সারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।