চায়না যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে তাহলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি না জড়ালেও তাইওয়ান এর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অংশ নিতে পারে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সবকিছুর পেছনেই আমেরিকার বড় স্বার্থ জড়িত।
তাইওয়ান এবং চীনের অবস্থান এমন এক জায়গায় যেখানে সিঙ্গাপুরসহ আরো কয়েকটি দেশের সমুদ্রর বন্দর অবস্থিত। ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে বিশ্বের অনেক জাহাজ এসব বন্দরে নিয়মিত পাড়ি জমায়। বিশ্ব অর্থনীতিকে সচলা রাখতে সমুস্র বন্দরের এ রুট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি যুদ্ধ বাঁধে তাহলে এ রুট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কেননা বাংলাদেশ চীন এবং তাইওয়ান থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য নিয়মিত আমদানি করে। পাশাপাশি মাঝারি আয়ের অধিকাংশ দেশ বিপদে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনতকে যুদ্ধের মুখে দাঁড় করে দিয়ে সরে এসেছে। আবার তারা অস্ত্র পাঠাচ্ছে যেন এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়। এতে করে ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য আগের থেকে অনেক বেড়েছে। যদি তারা একই কৌশল তাইওয়ান এর উপর প্রয়োগ করতে চায় তাহলে হয়তো এশিয়ার দেশগুলির যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা বাড়তে পারে।
আবার চীন এবং তাইওয়ান এর সংঘাত পশ্চিমা বিশ্বের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে করে অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে চীন এবং রাশিয়ার বলয়ে ঢুকতে পারে। ডলারকে বাদ দিয়ে রুবলের বা চীনের মুদ্রা ইউয়ান এর উপর নির্ভর করতে চাইবে অনেক দেশ।
যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাইওয়ানকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। রাশিয়ার মত চীনকে যুদ্ধে ঠেলে দিয়ে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এ যুদ্ধের ফলে চীনের অনেক অর্থ খরচ হবে এবং সামরিক খাতে ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে করে চীনের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের কাছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মর্যাদা হারিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উপর অনেক দেশ আস্থা রাখতে পারছে না। এখন যদি চীন এবং তাইওয়ান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র উস্কানি দেয় তাহলে বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আগের থেকে আরো দুর্বল হতে পারে।
তাইওয়ান এবং চীনের দক্ষিণের সমুদ্রের অংশে ফিলিপাইন-জাপান-সিঙ্গাপুর সহ আমেরিকার অনেক সামরিক ঘাটি থাকায় তারা সাহসের সঙ্গে তাইওয়ান এর পক্ষে অবস্থান করছে।
রাশিয়াকে ব্যস্ত রাখা এবং চীনকে তাইওয়ান এর দিকে যুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে লম্বা সময় ধরে আমেরিকা বিশ্ব রাজনীতিতে সবথেকে বড় খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে পরিচয় করাতে চায়। এতে করে বর্তমানে ইউরোপের বাজার ব্যবস্থায় আমেরিকা একচ্ছত্রভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে তেমনি চীন এবং তাইওয়ান এর যুদ্ধ বাঁধলে এশিয়ার বাজারে আমেরিকার আধিপত্য বাড়তে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।