প্রাচীন মিসরের পিরামিডগুলো আজও বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। মিসরের বিজ্ঞানীদের মূল লক্ষ্য ছিল—পিরামিডগুলো যেন চিরকাল টিকে থাকে। কারণ, মিসরের সম্রাট ফারাওদের প্রতি তাঁদের ছিল খুব বেশি আনুগত্য। তাঁরা মনে করতেন, মৃত্যুর পরেও ফারাওদের আত্মার অংশবিশেষ মরদেহের ভেতরেই থেকে যায়।
তবে আত্মার মূল অংশ সূর্যরশ্মির সঙ্গে সূর্যে চলে যায়। এভাবে ফারাওদের আত্মা স্বর্গ লাভ করে। সে জন্যই পিরামিডগুলো ত্রিভুজাকৃতির। তীক্ষ্ণ চূড়াটি এমন, যেন মৃত্যুর পর সহজেই ফারাওদের কল্পিত আত্মা সূর্যরশ্মি আশ্রয় করে স্বর্গে যেতে পারে। গিজার পিরামিডগুলো প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বছর আগে তৈরি। দীর্ঘকাল টিকে থাকার জন্য পিরামিড তৈরিতে যে গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়, সেগুলো ছিল মসৃণ। পানিতে যেন ক্ষয় না হয়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রাচীন মিসরীয়রা জ্ঞানবিজ্ঞানে খুব উঁচু মানের ছিল। পিরামিড তৈরির সময় তাদের স্থাপত্যকৌশল ছিল অসাধারণ। তাদের একটি বড় সমস্যা ছিল, পিরামিড তৈরির পাথরগুলো নির্মাণস্থলে নিয়ে আসা এবং সঠিক আকারে কেটে পিরামিডে ব্যবহার করা। এ দুটি কাজ ছিল কঠিন। কারণ, বালুর ওপর দিয়ে পাথর পরিবহন সহজ কথা নয়। এ জন্য সেই যুগের বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ উপায় উদ্ভাবন করেন। বিশেষ ধরনের স্লেজ তৈরি করা হয়।
প্রথমে চাকাবিহীন এই স্লেজগুলোয় পাথরের বড় বড় চাঁই তোলা হতো। বালুর ওপর দিয়ে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার সুবিধার জন্য স্লেজ থেকে বালুর ওপর পানি ছিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। ভেজা বালু একটু শক্ত হয় বলে সহজে স্লেজগুলো ঠেলে নেওয়া সম্ভব হয়। এরপর গ্র্যানাইট পাথর ছাঁচ অনুযায়ী কাটার বিশেষ ব্যবস্থাও তারা করে।
বিশেষ ডিজাইনে পাথর কাটা হয়। নিচের দিকের পাথরগুলো তাদের ঠিক ওপরের পাথরখণ্ডের চেয়ে একটু বড়। ফলে পিরামিডের ওপরের দিকের পাথরের চাপ নিচের পাথরগুলো বহন করতে পারে। সাড়ে চার হাজার বছরের পুরোনো পিরামিডগুলো আরও অনেক বছর টিকে থাকবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।