জুমবাংলা ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অসুস্থ শরীর নিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করেও যখন স্বাস্থ্যখাতের নানা অনিয়মের অভিযোগের তীর বারবার তার দিকে আসছিল তখন প্রচণ্ড মানসিক চাপে পড়েন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
মানসিক চাপ সামলাতে না পেরে শারীরিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চাপ থেকে মুক্তি পেতে পরিবার থেকেও তাকে স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু তার পদত্যাগের কথা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও জানতেন না। আজও তিনি অন্যান্য দিনের মতো অফিস করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আর আগে মাস দেড়েক আগেও স্বাস্থ্য মহাপরিচালক পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মহাপরিচালকের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দিলে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের ঘনিষ্টজনরা জানান, সরকারের উচ্চমহল থেকে তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলার মতো কোনো পরিবেশ বা ঘটনার উদ্ভব হয়নি। রিজেন্ট হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসা প্রদানের অনুমতি প্রদানের ব্যাপারে তাকে দায়ী করা হলেও এ ব্যাপারটিতে তার কোনো হাত ছিল না প্রমাণ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল তাকে জড়িয়ে নানা কুৎসা রটনা অব্যাহত রাখে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কিছু কর্মকর্তাও তার বিরুদ্ধে চলে যায়। কিছু কিছু মিডিয়াও প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তার ওপর দায় চাপিয়ে ‘অসত্য প্রতিবেদন’ প্রকাশিত ও প্রচার করতে থাকে। নানা কারণে প্রচণ্ড মানসিক চাপে পড়ে যান তিনি। এছাড়াও তার কিডনির সমস্যার কারণে স্কয়ার হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ও পরবর্তীতে বিদেশেও ফলোআপ চিকিৎসায় ছিলেন। মানসিক চাপে তিনি ইদানিং অসুস্থতাও বোধ করছিলেন।
তবে ভিন্ন একটি সূত্রের দাবি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। রিজেন্ট ও জেকেজি কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয় বলে সূত্রটি দাবি করে।
তবে প্রকৃত কারণ সুস্পষ্ট করে কেউ বলতে পারেনি। ফলে বলা চলে, করোনা সংক্রমণরোধে ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। ২১ জুলাই তিনি জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
একাধিক সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের গুরত্বপূর্ণ পদে থাকায় করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সকাল থেকে রাত অবধি তাকে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।
সূত্র জানায়, করোনা শুরুর আগে তিনি নিয়মিত রাত ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লেও করোনাকালে কাজের চাপে রাত ১টা বেজে গেলেও তিনি ঘুমাতেন না। নিজের পরিবারের সদস্যরাও তাকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর থেকেই চাপের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক।
তবে সর্বশেষ রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি প্রতারণার ঘটনা প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক হিসেবে দায় তার ওপর বর্তায়।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel