আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নাম তার তারুকো ইয়াহাতা। বর্তমানে বয়স ৮৫। যে বয়সে মানুষ সাধারণত বিছানায় পড়ে থাকে, সেই বয়সে তিনি করেছেন এক ব্যতিক্রমী কাজ। কী তা জানেন? এখন থেকে পাঁচ বছর আগে যখন তার বয়স ৮০ বছর ছিল, তখন তিনি ইংরেজি শিখতে শুরু করেন।
কিন্তু কেন এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ? তা জানলে আরও অবাক হবেন। কোনও স্বপ্ন জয় করতে নয়, তিনি ইংরেজি শিখেছেন যুদ্ধের বীভৎসতার গল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে।
জাপানে পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে যারা বেঁচে ফিরেছিলেন তাদেরকে স্থানীয়ভাবে ‘হিবাকুশা’ বলা হয়। ইয়াহাতা তাদেরই একজন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল আমেরিকা। ওই হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন ইয়াহাতা, তখন তার বয়স ছিল ৮ বছর।
ইংরেজি শেখার পেছনের উদ্দেশ্য কী, তা জানিয়েছেন ইয়াহাতা।
তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন দেশে গিয়ে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকালে তার শহর হিরোশিমায় চালানো ভয়াবহ সেই হামলার কথা শোনাতেন। কিন্তু জাপানি ভাষায় তিনি শ্রোতাদের প্রকৃত অভিব্যক্তি বোঝাতে পারছিলেন না। এ কষ্ট থেকেই ৮০ বছর বয়সে ইংরেজি শিখতে শুরু করেন ইয়াহাতা। সফলও হন। ২০২১ সালে তিনি প্রথম ইংরেজিতে পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য দেন।
ইয়াহাতা কীভাবে ইংরেজি চর্চা করছেন? একজন ইংরেজি শিক্ষকের কাছে তিনি প্রথমে নিজের গল্প বলেন। ওই শিক্ষক তার সেই গল্প ইংরেজিতে লিখে দেন। পরে ইয়াহাতা ঘরে তা অনুশীলন ও রেকর্ড করেন এবং শোনেন। এভাবে একপর্যায়ে পুরো বক্তব্য তার আয়ত্তে চলে আসে।
৯ মে হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে একদল ব্রিটিশ পর্যটকের সামনে বক্তব্য দিয়েছেন ইয়াহাতা। শ্রোতাদের একজন ডেনিস হিকসন বলেন, ইয়াহাতার ইংরেজির দক্ষতা হয়তো সীমাবদ্ধ। কিন্তু তার বক্তব্য শ্রোতাকে যেভাবে নাড়া দেয়, তা অনস্বীকার্য। তিনি এমনভাবে বীভৎসতার কথা বর্ণনা করেন যেন মনে হয়, ঘটনাটি আজকেরই। তার বক্তব্য শুনে অনেকে কেঁদে ফেলেন।
ইয়াহাতা বলেন, সেদিন (১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট) সকালে তীব্র নীলচে-সাদা আলোর ঝলকানি পুরো আকাশ আচ্ছাদিত করে ফেলে। সেই সঙ্গে তীব্র ঝাঁকুনিতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন ও জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। হিরোশিমা ও নাগাসাকির ঘটনায় কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বোমার তেজস্ক্রিয়তা বিপন্ন করেছে বেঁচে যাওয়া মানুষদের সারাটা জীবন। সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।