আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাছ; সবুজ পাতা ও ডালপালা পরিবেষ্টিত উদ্ভিদ যা প্রাণীকূলের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান অক্সিজেনের যোগানদাতা। তবে কিছু গাছ এই পরিচয়কেও ছাপিয়ে যায় নিজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও গুণের কারণে। তেমনই একটি গাছ ‘হাইপেরিয়ন’।
সম্প্রতি গাছটি আলোচনায় এসেছে বিশেষ কিছু কারণে, যার মধ্যে অন্যতম বিষয় হচ্ছে হাইপেরিয়নের দিকে নজর দিলেই জেল জরিমানার জালে জড়াতে হতে পারে যে কাউকে। আর এমনই আইন আরোপ করেছেন মার্কিন সরকার। কিন্তু কেন? চলুন এবার তবে, সেই গল্পই শোনা যাক!
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা গাছটির নাম হাইপেরিয়ন। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার ‘রেডউড ন্যাশনাল পার্কে’ অবস্থিত। আর এই নামকরণটি হয়েছে মূলত পৌরাণিক গ্রিক চন্দ্রদেবী সেলেনের বাবা হাইপেরিয়নের নামানুসারে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে গাছটির ওজন ছিলও আনুমানিক ২০৯ মেট্রিক টন! গাছটির বয়স আনুমানিক ৬০০ থেকে ৮০০ বছর। কিন্তু এখন থেকে কেউ গাছটিকে দেখতে চাইলে তাকে ৫ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা এবং সেইসাথে ছয় মাস কারাভোগের ঝুঁকি নিতে হবে।
এছাড়া ‘হাইপেরিয়ন’ গাছটির কাছে যাওয়ার জন্য ভালো কোনও রাস্তা নেই। ফলে বছরের পর বছর দর্শনার্থীরা গাছটি দেখার জন্য নিজেদের মতো রাস্তা বানিয়ে নিয়েছেন। ফলে পার্কের অন্যান্য জন্তু ও গাছপালার স্বাভাবিক আবাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওসব রাস্তায় পার্ককর্মীরা আবর্জনা ও মানব-বর্জ্যও খুঁজে পেয়েছেন। এদিকে পার্ক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘একজন দর্শনার্থী হিসেবে আপনি কি এই অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের অংশীদার হবেন নাকি ধ্বংসের সঙ্গী হবেন, সেটা নিজেই ঠিক করুন।’
মূলত ‘কোস্ট রেডউড’ জাতের গাছ ‘হাইপেরিয়ন’। এটির উচ্চতা ৩৮০ ফুটেরও বেশি। স্ট্যাচু অব লিবার্টির চেয়ে ১.২৫ গুণ বেশি উঁচু এ গাছটি। ২০০৬ সালে দুইজন গবেষক এ গাছটি খুঁজে বের করেন। এছাড়াও বিশ্বের অনেকগুলো সুউচ্চ গাছ রয়েছে এ পার্কটিতে। আর এখানে থাকা হেলিওস ও ইকারুস নামক দুইটি গাছের উচ্চতা যথাক্রমে ৩৭৭ ফুট ও ৩৭১ ফুট।
দীর্ঘসময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে ‘রেডউড গাছ’। বিবৃতিতে বলছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। ক্যালিফোর্নিয়ার ‘রেডউড ন্যাশনাল পার্ক’ দর্শনার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছে গাছটির চারপাশ থেকে দূরে থাকতে। কেননা গাছটির জনপ্রিয়তার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পার্কটির ওই এলাকা। এছাড়াও ওই এলাকায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক না থাকায় ঘুরতে গিয়ে কেউ হারিয়ে গেলেও অযথা বিড়ম্বনা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ নিয়ে নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাইতো এখন শুধুই দেখার পালা, দেশটির কঠোর আইন কি আদৌ আটকাতে পারবে হাইপেরিয়নের প্রতি মানুষের প্রবল আকর্ষণ। নাকি জয়ী হবে প্রকৃতি রক্ষায় আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ?
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।