স্পোর্টস ডেস্ক : মেহেদী হাসান মিরাজ যাই বলুন না কেন, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে না পারলে সাংবাদিকদের তুলনায় ক্রিকেটারদেরই ক্ষতি বেশি। তবে বাংলাদেশের ভাগ্য ভালো, সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার তাড়ায় শ্রীলঙ্কাকে নাকানিচুবানি খাইয়ে নিউ জিল্যান্ড মিরাজদের জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বিশ্বকাপের সেরা আট দল যাবে। এর মধ্যে ইংল্যান্ডের রানরেট বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিতে যেতেও পারে। তাই তাদের সমীকরণে না আনাই ভালো। এর চেয়ে রানরেটে পিছিয়ে থাকা দুই দল শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের কথা ভাবা যাক।
শ্রীলঙ্কার সব ম্যাচ শেষ। ৯ ম্যাচ শেষে লঙ্কানদের রানরেট -১.৪১৯। ওদিকে ৮ ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের রানরেট -১.১৪১। নেদারল্যান্ডসের যা -১.৬৩৫। অর্থাৎ নেদারল্যান্ডস যদি স্বাভাবিক কাজটা করে, অর্থাৎ ভারতের কাছে হেরে যায়, বাংলাদেশের অবস্থান বেশ সুবিধাজনক।
এখন পর্যন্ত যা অবস্থা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারলেও শ্রীলঙ্কার চেয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। তবে ব্যবধানটা কত?
এটা একদম নিখুঁতভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ, ম্যাচ পরিস্থিতির ওপর সবকিছু নির্ভর করে। ধরা যাক, অস্ট্রেলিয়া ৪০০ রান করে ফেলল আজকে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের কিন্তু কিছুটা হলেও চিন্তার কারণ আছে। কারণ, শ্রীলঙ্কার চেয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকতে হলে তখন অন্তত ২২৮ রান করতে হবে। অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়া ৪০০ রান করলে সর্বোচ্চ ১৭২ রানে হারতে পারবে বাংলাদেশ। আবার ৫০০ করলে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৩০ রান। তখন সর্বোচ্চ ১৭০ রানে হারতে পারবে বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়া ৩৫০ রান করলে সর্বোচ্চ ১৭৩ রানে হারতে পারবে বাংলাদেশ। এভাবে যদি ধীরে ধীরে ৩০০, ২৫০, ২০০ রান করে অস্ট্রেলিয়া, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ হারের ব্যবধানও ধীরে ধীরে ১৭৪, ১৭৫, ১৭৭ হবে। মানে, অস্ট্রেলিয়া ২০০ রানে থামলে, বাংলাদেশ ২৩ রান অলআউট হয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেও শ্রীলঙ্কার ওপরে থাকবে।
অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়া যত কম রানে থামবে, বাংলাদেশের হারের ব্যবধানের সীমা তত বাড়বে। এভাবে যদি বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়াকে ১৭৭ বা তার কম রানে আটকে ফেলতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের ব্যাটিং না করলেও চলবে। কারণ, ০ রানে অলআউট হলেও বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার ওপরে থাকবে।
এবার ধরা যাক, বাংলাদেশ আগে ব্যাট করল। এবং আগে ব্যাট করে ৩০০ করে ফেলল। সেক্ষেত্রে, অস্ট্রেলিয়া ২ ওভার ৩ বলের মধ্যে ম্যাচ শেষ না করলেই শ্রীলঙ্কার ওপরে থাকবে। রানটা ২৫০ হলে ওভার নেমে আসবে ২২ ওভার ৫ বলে। আবার ৪০০ রান করলেও সেটা হবে ২৪ ওভার ৫ বল। এদিক থেকে বাংলাদেশ নিরাপদ।
কিন্তু যদি কোনো কারণে ব্যাটিং ধস নামে? ধরা যাক, বাংলাদেশ ১০০ রানে গুটিয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ২০ ওভার ৩ বলের মধ্যে ম্যাচ শেষ করলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে পড়বে। ১৫০ রান করলে অস্ট্রেলিয়া যেন ২১ ওভার ২ বলের মধ্যে ম্যাচ শেষ না করে তা খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি ২০০ রান করলেও ঝুঁকি থাকবে। কারণ, তখন নিরাপদ সীমাটা হবে ২২ ওভার ১ বল।
অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়া ২২ ওভারে ২০০ তাড়া করতে পারলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে পড়বে। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার ২৩ ওভারে ২০০ রান তুলে নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। তবে এরই মধ্যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা এক দল এতটা পাগলাটে ক্রিকেট খেলবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন।
প্রশ্ন হতে পারে, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গেও সমীকরণ থাকার কথা বাংলাদেশের। তা আছে। কিন্তু নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ১৯৩ রানে পিছিয়ে। ওদিকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের বাস্তব-অবাস্তব সব সমীকরণই ১৭০ থেকে ১৭৭ রানের মধ্য। ফলে বাংলাদেশ যদি রানরেটে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে থাকে, তবে ভারতের বিপক্ষে ১ রানে হারলেও বা ম্যাচের শেষ বলে হারলেও বাংলাদেশকে তখন রানরেটে টপকাতে পারবে না নেদারল্যান্ডস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।