জুমবাংলা ডেস্ক : পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া আসলে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়ার অন্যতম। পাইকারি ব্যবসা করার সুবিধা হল এই ব্যবসায় লাভ বেশি। যদিও বিনিয়োগও করতে হয় বেশি। সাধারণত যাদের মূলধন বেশি তারা পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পাইকারি ব্যবসা করার মাধ্যমে ব্যবসাকে খুব দ্রুত সম্প্রসারণ করা সম্ভব। পুঁজি বেশি থাকলে এবং নিজস্ব ট্রাক বা যানবাহন থাকলে পাইকারি ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া সম্ভব।
যাই হোক, আজকের এই লেখায় বর্তমানের বাংলাদেশের পাইকারি বাজার যাচাই করে কিছু পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরা হল। আপাতত, সবাই করতে পারে এমন কিছু লাভজনক পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করলাম। আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে, কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায় এই লেখাটি পড়ে নিতে পারেন।
১. পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা: পুঁজি: কমপক্ষে ৮ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবেন: নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার, কুমিল্লা, ভারত, চীন, পাকিস্তান। ঢাকার ইসলামপুর পানকারী কাপড়ের বাজারের জন্য বিখ্যাত। ইসলামপুর গেলেই আপনি বুঝতে পারবেন তারা কোথা থেকে কাপড় কিনে। মূলত কয়েকটি ধাপে পাইকারদের নিকট কাপড় আসে। সেখান থেকে তারা পাইকারি দরে কাপড় বিক্রি করে থাকে।
তবে, আপনাকে প্রথমে ঠিক করে নিতে হবে আপনি কোন ধরণের কাপড় নিয়ে ব্যবসা করতে চান। সেটা হতে পারে গজ কাপড়, থ্রি পিস, শাড়ি, লুঙ্গি ইত্যাদি। আপনি যেই কাপড় নিয়ে ব্যবসা করবেন। প্রথমে খোঁজ নিন, কাপড়ের মূল উৎস। যেমন জামদানির জন্য আপনি নারায়ণগঞ্জ খোঁজ নিতে পারেন। আর ইসলামপুর বা পাইকারি মার্কেটে ব্যবসা করলে। আপনার জন্য এই ব্যবসা আরও সহজ হয়ে যাবে।
২. কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসা: পুঁজি: কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবেন: শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, বিভিন্ন গ্রামের কৃষক।সাধারণত, কারওয়ান বাজার কিংবা শ্যামবাজারে যারা পাইকারি ব্যবসা করে। তারা কৃষক থেকে পণ্য আনে না। তাদের নিকট আরেকটি অংশ থাকে যারা ট্রাকে করে কৃষক কিংবা আড়তদারের নিকট থেকে পণ্য নিয়ে আসে। তারপর সেটা পাইকারদের নিকট বিক্রি করে। এখন আপনি যদি এসব জায়গাতে পাইকারি ব্যবসা করতে চান তাহলে, কাঁচামাল সংগ্রহ নিয়ে কষ্ট করতে হবে না।
কিন্তু, আপনি যদি অন্যভাবে পাইকারি ব্যবসা করতে চান। তাহলে, আপনি ২টি কাজ করতে পারেন। যথা: সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারেন। বিভিন্ন মার্কেটের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাঁচামাল সরবারহের চুক্তি করে নিতে পারেন। এর ফলে কাঁচামাল স্টকের খরচ বেঁচে যাবে। যেহেতু, কৃষক থেকে সরাসরি খুচরা বিক্রেতার নিকট দিচ্ছেন তাই, লাভও বেশি হবে। মনে রাখবেন, এই পদ্ধতি অনুসরণের ক্ষেত্রে আপনার যানবাহন এবং কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ ঠিক রাখতে হবে।
৩. মুদি সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসা: পুঁজি: কমপক্ষে ৭ লক্ষ। কোথায় পাবেন: উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ডিলার, শ্যামবাজার, কারওয়ানবাজর, চকবাজার, চট্টগ্রাম। মুদি সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসা করার সহজ উপায় হলও যেকোনো পণ্যের ডিলারশীপ নেয়া। এছাড়া, আপনি চাইলে শুধু চাউলের পাইকারি ব্যবসা করতে পারেন। আবার, মশলা, তেল কিংবা অন্যান্য পণ্যেরও করতে পারেন। মুদি দোকানের আইটেম তালিকা এই লেখাটি পড়ে মুদি দোকানের সকল পণ্য সম্পকের্ ধারণা পেয়ে যাবেন।
৪. চালের পাইকারি ব্যবসা: পুঁজি: কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবেন: বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা। চালের পাইকারি ব্যবসার জন্য বিখ্যাত বাদামতলী, বাবুবাজার। এবার আসেন, তারা কিভাবে পাইকারি ব্যবসা করে সেটা জানি। পাইকারি ব্যবসা বা চাল আড়তদাররা বিভিন্ন জেলায় নিজস্ব প্রতিনিধি প্রেরণ। তারা ট্রাকে করে পণ্য পাইকারের নিকট নিয়ে আসে। সেক্ষেত্রে পাইকারকে বস্তা, গাড়িভাড়া, শ্রমিকের মজুরি বহন করতে হবে।
এখন, আপনি যদি চালের পাইকারি ব্যবসা করতে চান তাহলে, একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। চালের পাইকারি ব্যবসা শুরু করার পূর্বে করণীয়: চালের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। সঠিক জায়গায় আড়ত বা দোকান ঠিক করা। যাতে করে গাড়ি সরাসরি আসতে পারে এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের নজরে থাকে।
৫. টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা: পুঁজি: কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবেন: গার্মেন্টস। টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা করা সহজ। আপনি চাইলে স্বল্প মূলধনে টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনেকে ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, বনভোজন ইত্যাদি প্রয়োজনে টি-শার্ট প্রয়োজন হয়। আপনি যদি এসব অর্ডার নিয়ে গার্মেন্টস থেকে টি-শার্ট বানিয়ে নেন। তাহলে, কম খরচে ব্যবসা করতে পারবেন। এছাড়া, নিজের গার্মেন্টস থেকে টি-শার্ট তৈরি করেও পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পরিশেষে: এই ছিল আজকে, পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া। যেকোনো ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই মার্কেট বিশ্লেষণ এবং যে পণ্য নিয়ে কাজ করবেন সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। আমরা এখানে শুধু ধারণা দিয়েছি। বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আপনার। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।