বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : মরিতে চাহে না মানুষ সুন্দর ভুবনে। তাই যুগ যুগ ধরে অমরত্বের পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে। শত যুগ পেরিয়ে এসেও মানুষের সেই আশা পূরণ হয়নি। অমরত্ব দূরে থাক, শত বছর বেঁচে থাকার তরিকাও এখনো পাননি চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।
কালেভদ্রে কয়েকজন হয়তো জীবনের শতাব্দী পার করেন, কিন্তু সেখানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কিছুটা ভাগ্যের আশীর্বাদ কিছুটা খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন ও উত্তরাধিকার সূত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি কাজ করে। তবে অমরত্বের সন্ধান করতে গিয়ে অনেক নতুন জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছে।
প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে বিভিন্ন দেশের পণ্ডিতরা অমরত্বের সন্ধান করতে গিয়ে করেছেন আলকেমির চর্চা। চেয়েছেন অমৃতরস আবিষ্কার করতে।
তবে হাজার বছরের সাধনাতেও বিজ্ঞানীদের কপাল খোলেনি। কিন্তু রসায়নবিদ্যা ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছেন ওইসব অ্যালকেমিস্টরাই।
কিন্তু মানুষের অমরত্ব দেওয়ার জিনিস তৈরি করতে গিয়ে যদি মানববিধ্বংসী কেমিক্যাল আবিষ্কার হয়ে যায়, কেমন লাগে ভেবে দেখুুন!
ঘটনাটা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে। তখন চীনের মসনদে বসে আছেন হান সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রভাবশালী সম্রাট উ দি।
তখন রাজা-বাদশাহরা ভীষণ ভোগ-বিলাসী ছিলেন। সব দেশের রাজা-বাদশারাই। নিজেদের আরাম-আয়েশের জন্য রাজকোষ শূন্য করার নজিরও কম ছিল না। সুতরাং ওই সব রাজা বা সম্রাটেরা মৃত্যুকে জয় করতে চাইবেন, সেটাই স্বাভাবিক। উ দি রাজ্যের গবেষকদের তলব করলেন।
আদেশ দিলেন, যেন তার জন্য অমৃত রস শিগিগিরই তৈরি করা হয়।
গবেষকেরা তটস্থ হয়ে শুরু করে দিলেন কাজ। সালফারের সঙ্গে পটাশিয়াম নাইট্রেট মিশিয়ে বানাতে চাইলেন ওষুধ। কিন্তু এ মিশ্রণের ফল হলো বিধ্বংসী। দুই ধরনের রাসায়নিক পরস্পরের সংস্পর্শে আসামাত্র বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু সেই বিস্ফোরণ অত বড় কিছু ছিল না। সে ঘটনায় কেউ নিহত হওয়ার কোনো তথ্য ইতিহাসে নেই।
প্রথমে গবেষকরা এই ছোট্ট বিস্ফোরণটাকে পাত্তা দেননি। ধরেই নিয়েছিলেন, অমরত্ব দেবে যে জিনিস, সেটা তৈরি করতে গেলে একটু তেজ দেখাবে! নিশ্চয়ই আরেকটু চেষ্টা করলেই কাঙ্ক্ষিত অমৃত তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও উ দির গবেষকেরা সফল হননি। সুতরাং রণে ভঙ্গ দেন তারা। বন্ধ হয় সে গবেষণা।
বহুদিন অবশ্য গোলাবারুদ নিয়ে গবেষণা চাপা পড়ে ছিল। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে আবার এটা টুকটাক কাজ করা হয়। কিন্তু সে সময় বারুদ ব্যবহার করে পূজা-আচার বা অনুষ্ঠানে বাজি ফোটানো হতো। এর বাইরে যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষ মারার কাজে তখেনো বারুদের ব্যবহার শুরু হয়নি।
অষ্টম শতাব্দীতে বারুদের গবেষণা তুঙ্গে ওঠে এবং যুদ্ধক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয় গোলাবারুদ। এমনকি গোলাবারুদের সাহায্যে চীনারা ইতিহাসের প্রথম রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।