জুমবাংলা ডেস্ক : পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মাটিতে পুঁতে রাখা কলেজছাত্র ফাহিদ হাসান সিফাতের (১৮) লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব। আজ শনিবার উপজেলার রাধানগড় ইউনিয়নের ছোটদাপ এলাকায় নিহতের বাড়ির পাশে একটি ক্ষেত থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফাহিদ হাসান সিফাত ওই এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে এবং দিনাজপুর আদর্শ কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিফাতের প্রতিবেশি চাচাতো ভাই মতিউর রহমান, তার বাবা মোখলেছার রহমান, মা ময়না বেগম ও মতিউরের চাচাতো ভাই লিমনকে আটক করা হয়েছে। মতিউর রহমান পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
মরদেহ উদ্ধারের পর সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদদৌস জানান, পারিবারিক কলহের জেরেই গত ৪ জানুয়ারি সিফাতকে বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই মতিউর রহমান। হত্যার আগেই সেখানে গর্ত করে রাখে মতিউর। হত্যার পর গর্তে লাশ রেখে মাটি চাপা দিয়ে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরতে থাকে সে।
তিনি আরও জানান, সিফাতকে খুঁজে না পেয়ে ৫ জানুয়ারি আটোয়ারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা সফিকুল ইসলাম। ওই দিন সন্ধ্যায় সিফাতের ফোন থেকে তার বাবার কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে হত্যাকারী। মুক্তিপণের জন্য এক লাখ টাকা দিতে রাজিও হন সিফাতের বাবা। এদিকে পুলিশ সিফাতের কোনো সন্ধান দিতে না পারায় গতকাল শুক্রবার র্যাব-১৩ এর দপ্তরে অভিযোগ করেন নিহতের বাবা সফিকুল ইসলাম।
সিফাতকে উদ্ধারে ওই দিনই মাঠে নামে র্যাব। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজন হিসেবে সিফাতের প্রতিবেশি মতিউর রহমানসহ চারজনকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে মতিউর রহমান। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী বাড়ির পাশের ফসলি জমি থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল ও হত্যাকারীর মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ। ঠাকুরগাঁও পিবিআইয়ের এএসপি এবিএম রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে পিবিআই ও পঞ্চগড় সিআইডির একটি দল মরদেহের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
সিফাতের বাবা সফিকুল ইসলাম জানান, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সিফাত সবার বড়। গত ৩ জানুয়ারি সিফাত দিনাজপুর থেকে বাসায় আসে। কিছুদিন ধরে সে দিনাজপুরে কোচিং করছিল। ৪ জানুয়ারি রাত ৮টায় বন্ধুদের সঙ্গে ব্যাটমিন্টন খেলতে বাসা থেকে বের হয় সিফাত। পরে আর ফেরেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘পরের দিন ৫ জানুয়ারি আটোয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। ওই দিন রাতেই সিফাতের মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কয়েকদফায় টাকা দেওয়ার কথা হয়। বিকাশের মাধ্যেমে একটি নম্বরে ৮ হাজার টাকাও পাঠানো হয়। এরপরেও সিফাত না ফিরলে গতকাল র্যাবের কাছে অভিযোগ দেন। ’ ছেলে সিফাতকে হত্যার ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন সফিকুল ইসলাম।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দীন জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মতিউর রহমানসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।