জুমবাংলা ডেস্ক : জমি থেকে আমন ধান কাটা হয়ে গেছে। এখন খুব দ্রুত রসুন লাগানোর সময়। জমি শুকিয়ে গেলে জমি রসুন উপযোগী থাকবে না। তাই জমিতে রসুন লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চলনবিলের কৃষকরা। কৃষকের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও যোগ দিচ্ছেন রসুন লাগানোর কাজে।
জানা যায়, গুরুদাসপুর চলনবিল এলাকা রসুনের চাষ করা হয়। রোপনের এক সপ্তাহের মধ্যেই চারা বের হয়। কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে রসুন চাষে। আগের তুলনায় এখন বিঘা প্রতি ৬-৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। কৃষকরা রসুনের সাথে সাথি ফসল হিসেবে তরমুজ ও বাঙ্গী চাষ করছেন। রসুনে লোকসান হলেও তা সাথি ফসল দিয়ে পুষিয়ে নিচ্ছেন কৃষক। চলতি মৌসুমে রসুন চাষে বিঘা প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলেন কৃষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, গুরুদাসপুরসহ চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় রসুন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেকে রসুন লাগাতে শ্রমিকও নিয়োগ করেছেন। মহিলাদের দিয়ে রসুনের কোয়া ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত আছেন। শ্রমিকের মজুরি বাবদ ২০০-২৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে কৃষকের।
গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমি আমার ৫ বিঘা জমিতে রসুনের চাষ করেছি। রসুন চাষে কৃষি উপকরণ, শ্রমিকের মজুরি বাবদ ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। রসুনের সাথে সাথি ফসল হিসেবে ৫ বিঘায় বাঙ্গি চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারবো।
একই এলাকার পাটপাড়া গ্রামের কৃষক সুকুমার সরকার বলেন, আমি ৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে রসুনের চাষ করছি। গত বছরের তুলনায় এবছর বিঘা প্রতি ব্যয় ৬-৭ হাজার টাকা বেড়েছে। রসুনের ন্যায্য দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
চলনবিলের রসুন চাষী আফজাল হোসেন ও জামাল উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমি বিগত ২২ বছর যাবত রসুন চাষ করছেন। এবছর ঋন নিয়ে তারপর জমি লিজ নিয়ে রসুন রোপন করেছেন। রসুনের বাজারদর ভালো না পেলে সর্বহারা হতে হবে তাদের।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্র মতে, চলনবিলেরসহ আশেপাশের গুরুদাসপুর,সিংড়া, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ, চাটমোহরসহ আরো অনেক উপজেলায় বিনাহালে রসুনচাষ পদ্ধতি ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এই পদ্ধতিতে রসুন চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ বলেন, কৃষকরা এখন রসুন চাষে ব্যস্ত। প্রতি বিঘা জমিতে ২৫-৩০ মন হারে রসুন উৎপাদন হয়। কৃষকরা রসুনের সাথে সাথি ফসল হিসেবে তরমুজ, বাঙ্গি চাষ কের থাকেন। এতে তারা অধিক লাভবান হতে পারেন।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, চলনবিল ও তার আশেপাশের এলাকায় এবছর ২২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে রসুন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে চলনবিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রসুন চাষ করা হচ্ছে। আমরা কৃষকদের সার ও বিভিন্ন কৃষি উপকরণ দিয়ে সহযোগীতা করছি। আশা করছি তারা লাভবান হতে পারবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।