জুমবাংলা ডেস্ক: দীর্ঘ ৭ বছর পর রাঙামাটির স্বপ্নের সেতুর যাত্রা শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাঙামাটির নানিয়ারচর সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে তিনি কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত সংযোগ সড়কের উদ্বোধন করেছেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সেতুটি উদ্বোধনের পর আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায় রাঙামাটিবাসীর মধ্যে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নানিয়ারচরে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘতম এ সেতু নির্মাণের ফলে শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন আরও একধাপ এগোলো। এতে করে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখবে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি করেছিলাম। এখনো শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
বান্দরবানের সীমান্ত সড়ক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তার জন্য সীমান্ত সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ সড়কটি নির্মাণের ফলে স্থানীয়দের যাতায়াত ব্যবস্থা এবং সীমান্ত সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণে সেনাবাহিনী কাজ করছে।
জানা গেছে, দীর্ঘ ৫০ বছর বছর ধরে নানিয়ারচরের বাসিন্দাদের দাবি ছিল রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের চেঙ্গি নদীর উপর একটি সংযোগ সেতুর। বর্তমান সরকারের কারণে রাঙামাটির সে স্বপ্নে সেতুটি পাহাড়ে পাহাড়ে তৈরি করেছে যোগাযোগের নতুন মাত্রা। শুধু নানিয়ারচর উপজেলার বাসিন্দারা নয়, এ সেতুর সুফল ভোগ করবে রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু, খাগড়াছড়ি-সাজেক-বাঘাইছড়ির বাসিন্দরাও। এতে যেমন সচল হবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঠিক তেমনি অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন হবে কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটেলিয়ান (ইসিবি) ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর রাঙামাটির নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাঙামাটির নানিয়ারচরের এক জনসভায় এ সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। এর পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইসি ব্রিগেড এর ১৯ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) ইউনিট এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। বর্তমানে পুরোপুরি শেষ হয়েছে নানিয়ারচর সেতু নির্মাণ কাজ। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার এবং প্রস্থ ৯.৮ মিটার। সেতু প্রকল্পটির মোট বাজেট ২২৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য খরচ হয় ৪৬ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। সেতুটির সাথে সংযোগ সড়ক রয়েছে ২.২ মিটার। এই সড়কের প্রস্থ ৭.৯ মিটার।
সেতুটির উদ্বোধন উপলক্ষে আজ সকালে সেতুর উত্তর পাশে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির সাংসদ দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম সংরক্ষিত আসনের সাংসদ বাসন্তি চাকমা, চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন, রাঙামাটি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইমতাজ উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসই প্রু চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও রাঙামাটি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।